রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ডজনখানেক আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চলে। কিন্তু যাত্রী পরিবহণে থাকছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই। এমনকি টিকিট ছাড়াই ট্রেনে ওঠে পুলিশ বা ট্রেন কর্মচারীদের সঙ্গে যাত্রীদের চুক্তি করে ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। একাজে তাদের সহযোগিতা করছে এক বিশাল দালাল সিন্ডিকেট।
দালালরা প্রথমে চুক্তি করে যাত্রীকে ট্রেনের কর্মচারী বা পুলিশের কাছে পাঠায়। ট্রেন ছাড়ার পর ফাঁকা আসনে তাদের বসিয়ে দেয়া হয়।
রাজশাহী স্টেশন ঘিরে গড়ে ওঠা একাধিক টিকিট কালোবাজারি চক্রের অপতৎপরতার কারণে স¤প্রতি সাধারণ যাত্রীদের ট্রেনের টিকিট না পাওয়া নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠে। এমনকি সেই চক্রের সঙ্গে রাজশাহী রেলস্টেশনের এক বুকিং সহকারী জড়িত থাকার তথ্যও পাওয়া যায়।
এ ঘটনার পরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে নতুন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার নিজেই মাঠে নেমে তদারকি শুরু করেন। স্টেশনে গিয়ে টিকিটের খোঁজ নেওয়াসহ ট্রেন ছাড়ার আগে টিকিট চেক করে প্লাটফর্মে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন যাত্রীদের। কিন্তু এতকিছুর পরও ট্রেনে থাকছে অতিরিক্ত যাত্রী।
মূলত করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ট্রেনে অর্ধেক যাত্রী বহন শুরু করা হয়। যাত্রীদের জন্য একটির পর একটি করে ফাঁকা রেখে আসন বিন্যাস করা হয়। কিন্তু ট্রেনে ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
গত শুক্রবার বিভিন্ন ট্রেনের বগিগুলোর আসনের সবগুলোতেই যাত্রী পরিবহণ করতে থাকতে দেখা যায়। ট্রেনের গেটে গেটে টিকিট ছাড়া যাত্রীদের জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে তাদের ফাঁকা আসনে বসিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিছু যাত্রীদের আবার পুলিশের সঙ্গে চুক্তি করে নির্ধারিত টুল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
শুক্রবার সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের গেটে পুলিশের জন্য নির্ধারিত আসনে তিন যুবককে বসে থাকতে দেখে তাদের কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তারা টিকিট ছাড়াই উঠে ট্রেনের কর্মচারীদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বলে তথ্য দেন। তবে তাদের পরিচয় ও ছবি নেওয়া হলে তা প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন তারা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ট্রেন ছাড়ার আগে যাত্রীদের টিকিট চেক করে প্লাটফর্মে প্রবেশ করানো হয়। কিন্তু চুক্তি করে ট্রেনে যাত্রী প্রবেশের বিষয়টি আমি জানতাম না। এই কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য