রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট থেকে ছোটভাকলার অন্তারমোড় পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। অসময়ে ভাঙনে গত এক মাসে নদীতীরবর্তী এলাকার কৃষিজমি ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে অন্যত্র চলে গেছে অনেকেই।
সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙনে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট থেকে দেবগ্রাম অন্তারমোড় এলাকার অনেক জায়গা দেবে গেছে। এ ছাড়া দৌলতদিয়া ইউপির নতুন পাড়া, বাহির চর দৌলতদিয়া, নাসির সরদার পাড়া, ঢল্লাপাড়া, দেবগ্রাম ইউপির কাওয়ালজানি ও দেবগ্রাম এবং ছোটভাকলা ইউপির ছোটো জলো ও কাওয়ালজানির অনেকাংশ ভাঙছে। এতে সরিষা, ভুট্টা, উচ্ছে, টমেটোসহ নানা সবজি ও ফসল তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাহাজদ্দিন বেপারিপাড়ার অনিক শেখ জানান, প্রতি বছর বর্ষায় বেশি ভাঙে। এখন শুষ্ক মৌসুমে এসেও ভাঙন দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। ভাঙনে অনেকের ফসলসহ জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মণ্ডল বলেন, শুষ্ক মৌসুমেও নতুন পাড়া, সাহাজদ্দিন বেপারিপাড়া, ঢল্লাপাড়া, বাহিরচর দৌলতদিয়া ও নাসির সরদার পাড়ার মাথায় বেশি ভাঙছে। নদীশাসনের কথা বারবার আলোচনায় এলেও অগ্রগতি হয়নি। অবিলম্বে নদীশাসনের উদ্যোগ গ্রহণ না করলে আরো ক্ষতি হতে পারে।
দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, কাওয়ালজানি এলাকায় বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে ভাঙন আতঙ্কে অন্যত্র চলে গেছে প্রায় ৩০ পরিবার। এখনো ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে প্রায় ৩শ পরিবার।ছোটভাকলা ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন জানান, ভাঙনে বিঘার পর বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। আতঙ্কে সরে গেছে প্রায় ২০টির মতো পরিবার। ভাঙনঝুঁকিতে আছে আরো দুই শতাধিক পরিবার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান বলেন, ‘কী পরিমাণ জমি বিলীন হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে দৌলতদিয়া ইউনিয়নে সাত বছর আগে আবাদি কৃষিজমি ছিল প্রায় ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর। এর মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর। এ সংক্রান্ত একটি তথ্য জেলার ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান বলেন, ‘আমিও শুনেছি নদীভাঙনের খবর। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু করণীয় থাকলে তাও করা হবে।’
মন্তব্য