-->
শিরোনাম

কেরানীগঞ্জের ওয়াসিম হত্যায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকা
কেরানীগঞ্জের ওয়াসিম হত্যায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড
রায় উপলক্ষে দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। ছবি- ভোরের আকাশ

সাত বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আগানগর বাঁশপট্টি এলাকায় ওয়াসিম নামে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫ম আদালতের বিচারক ফাইজুন্নেছা এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. আব্দুল বাতেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে আলম, মো. পলক রহমান ওরফে ডেঞ্জার সাগর ও পাপ্পু।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম দস্তগীর ভোরের আকাশকে বলেন, ‘আসামিদের মধ্যে আব্দুল বাতেন ও পলক কারাগারে ছিলেন। রায় ঘোষণার আগে তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবার তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।’

রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এ আইনজীবী বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীর মাধ্যমে মামলাটি প্রমাণ করতে পেরেছি। আসামিরা সর্বোচ্চ সাজা পেয়েছে।’

দণ্ডপ্রাপ্ত বাতেনের আইনজীবী বিশ্বনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিম্ন আদালতে ন্যায়বিচার পাইনি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব, উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাব।’

রায় শেষে এজলাসে উচ্চস্বরে কাঁদতে শুরু করেন বাতেন ও পলক। উচ্চস্বরে তারা বলতে থাকেন, ‘আমরা নির্দোষ। আমাদের অহেতুক এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমরা কিছু করিনি।’

এ সময় আদালতের বারান্দায় আসামিদের পরিবারের লোকজনকে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।

মামলার নথিপত্র ঘেঁটে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আগানগর বাঁশপট্টি এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর পাওয়ার স্টেশনের থেকে থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করে। পরে পুলিশ তদন্ত করে লাশের পরিচয় এবং হত্যার কারণ উদঘাটন করে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর আসামিরা জানান, বাঁশ ব্যবসায়ী আলমকে ক্লাব থেকে বের করে দেন ওয়াসিম। এ নিয়ে গণ্ডগোল ও মনোমালিন্য চলছিল। এ কারণে ওয়াসিমকে হত্যা করার জন্য বাতেনের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেন আলম।

সে অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৩ এপ্রিল পলক ও সজীব বাঁশপট্টি দালানের সিলভারের মিলের কারখানায় বসে থাকেন। বাতেন ও পাপ্পু ওয়াসিমকে বাবুবাজার ব্রিজের ওপর থেকে ডেকে পলাশের কারখানায় নিয়ে যান। ওয়াসিম সেখানে যাওয়ার সঙ্গেসঙ্গে সজীব, পাপ্পু ও বাতেন তাকে ধরে রাখেন। পলক গেঞ্জি দিয়ে তার মুখ, হাত, পা বেঁধে ফেলেন। পরে তারা সবাই মিলে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ওয়াসিমকে হত্যা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৬ সালে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। সজীব শিশু হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শিশু আইনে অভিযোগ দেওয়া হয়।

গত বছরের ২৪ জানুয়ারি চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সজীবের মামলাটি শিশু আদালতে বিচারাধীন।

মন্তব্য

Beta version