-->

ধানের দাম কম, সরবরাহে অনাগ্রহ

আমির হামজা, হবিগঞ্জ
ধানের দাম কম, সরবরাহে অনাগ্রহ

বাজারের চেয়ে দাম কম ও সরবরাহে ভোগান্তির কারণে হবিগঞ্জের কৃষকরা সরকারকে ধান দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে এবার আমন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জিত হবে না বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা। তবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা এরই মধ্যে শতভাগ অর্জিত হয়েছে। এখন অতিরিক্ত চাল সংগ্রহ চলছে।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪ হাজার ২৫২ টন আমন ধান ও ৩ হাজার ২০০ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করে খাদ্য অধিদপ্তর। এবার সরকার ২৭ টাকা কেজি দরে ধান এবং ৪০ টাকা কেজি দরে চাল সংগ্রহ করছে।

তবে ধান সরবরাহে কৃষকের তেমন আগ্রহ নেই। ফলে মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসেও ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র এক-চতুর্থাংশ। অর্থাৎ জেলায় গত রোববার পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ১১৭ টন। এ অভিযান শেষ হচ্ছে ২৮ ফেব্রুয়ারি। এদিকে হবিগঞ্জের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রকারভেদে বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা মণ।

বাহুবলের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে হলে তাদের গুদামে দিয়ে আসতে হয়। কিন্তু দাম বাজারদরের মতোই। তাদের ধান দিতে হলে আলাদা গাড়ি ভাড়া লাগে। আবার অনলাইনেও আবেদন করতে হয়। নানা ভোগান্তি তো আছেই। তাই এ বছর আমরা বাজারেই বিক্রি করে ফেলছি।

চুনারুঘাটের রাজারবার এলাকার কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, সরকারকে ধান দিয়ে লাভ কী? এতে আমাদের লোকসান হয়। এ ছাড়া কষ্ট তো আছেই। পাইকাররা আমাদের বাড়িতে ধান এসে নিয়ে যায়, আর সরকারকে খাদ্যগুদামে দিতে হয়। তাই সরকারকে ধান দিইনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। অভিযান শেষ হওয়ার আরো ১৯ দিন বাকি থাকতেই চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এ পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৬৬৬ টন।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) দিলদার মাহমুদ বলেন, ধান দিতে কৃষকরা ২ বছর ধরেই অনীহা দেখাচ্ছেন। তবে অন্যসময় ধান দিতে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও এবার তা করা হচ্ছে না। যারা ধান দিতে আসছেন, তাদের ধান রাখা হচ্ছে। না দিলে কাউকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে না। চাল সংগ্রহ ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এখন চলছে অতিরিক্ত সংগ্রহ। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চাল সংগ্রহ অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য

Beta version