বাচ্চা চুরির সন্দেহে আটক করা হয় মনিকা হিজড়া নামের এক ট্রান্সজেন্ডারকে। এ ঘটনায় তার সহযোগীরা বুধবার সন্ধ্যায় হামলা চালিয়েছে টাঙ্গাইল সদর পুলিশ ফাঁড়িতে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় পুলিশ ফাঁড়ি, আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় আটক করা হয় মনিকা হিজড়াসহ চার ট্রান্সজেন্ডারকে। পরে ওই সন্তান মনিকা হিজড়ার নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মনিকা হিজড়া জানান, তার বাড়ি জামালপুরের মেলান্দ উপজেলার শেহরীপূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি আগে ছিলেন কামরুজ্জামান। ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে একই উপজেলার পপি খাতুন নামের এক নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান হন। এরপরই তার শারীরিক পরিবর্তন হতে থাকে। এ কারণে তার স্ত্রী পপি খাতুন তাকে ছেড়ে তার চাচাতো ভাইকে বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান।
২০১৮ সালে কামরুজ্জামান হিজড়ায় পরিণত হওয়ার পর তার নাম রাখা হয় মনিকা হিজড়া। এরপর থেকেই তিনি তার কন্যাকে লালন-পালন করছেন। গত শনিবার মেয়েকে নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি জামালপুরে আসেন মনিকা হিজড়া। বুধবার ঢাকা ফেরার জন্য সদর উপজেলার বাইপাস এলাকায় যান তিনি। এ সময় গাড়িচালক ও যাত্রীরা মনিকা হিজড়ার কোলে বাচ্চা দেখে সন্দেহ করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। পরে তারা ৯৯৯-এ ফোন করলে টাঙ্গাইল সদর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা গিয়ে মনিকা হিজড়াকে আটক করেন। এক পর্যায়ে মনিকা হিজড়া তাদের গুরুকে ফোন দেয়। পরে টাঙ্গাইলের বেশ কয়েকজন হিজড়া ফাঁড়িতে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান।
ফাঁড়ির ইনচার্জ শামীম হোসেন বলেন, ‘বাচ্চা চুরি করে পালাচ্ছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দেহমূলকভাবে মনিকা হিজড়াকে আটক করা হয়। এ খবরে অন্য হিজড়ারা ফাঁড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিন হিজড়াকে আটক হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’
তিনি বলেন, ‘মনিকা ওরফে কামরুজ্জামানের সাবেক স্ত্রী পপি খাতুনকে খবর দেওয়া হয়েছিল। তিনি এসেছিলেন এবং তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্তান তাদেরই। তার স্বামীর শারীরিক পরিবর্তন হওয়ায় তিনি তাকে তালাক দিয়েছেন। এ কারণে তার সন্তানটি স্বামী মনিকা ওরফে কামরুজ্জামানের কাছেই থাকে। এ জন্য মনিকাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর আটককৃত তিনজনের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য