-->
শিরোনাম
খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি

‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’
ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্যগুদাম

পরিবহণ খরচসহ গুণগত মান যাচাইয়ের জটিলতার কারণে কৃষকরা দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রিতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এ কারণে ৮৭ দিনেও লক্ষ্যমাত্রার এক শতাংশ ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত এক হাজার টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ছয় টন ধান সংগ্রহ করা গেছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নির্দেশনা অনুযায়ী অ্যাপের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করে উপজেলার কৃষকরা। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের উপস্থিতিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে লটারির মাধ্যমে নিবন্ধিত কৃষকদের মধ্য থেকে ৬৫০ জন কৃষককে নির্বাচিত করা হয়। মূলত এই ৬৫০ জন কৃষকই খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারবে। গত বছরের ২৪ নভেম্বর এই ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে সরকারি মূল্য স্থানীয় বাজার মূল্যের প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আসছে না।

জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি ধান ২৭ টাকা এবং চাল ৪০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। কিন্তু গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৮৭ দিনে খাদ্যগুদামে তিনজন কৃষকের কাছ থেকে ছয় টন ধান কিনতে পেরেছে খাদ্য বিভাগ। অথচ সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্যগুদামে তিন হাজার ৯৪৪ দশমিক ৬৫ টন চাল এবং এক হাজার টন ধান কেনার কথা।

ফুলবাড়ী হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি আমন ধান ২৫ টাকা ২৫ পয়সা দরে বেচাকেনা হচ্ছে।

উপজেলার পৌর এলাকার আদর্শ কৃষক অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান বলেন, ক্ষেতের ধান শুকিয়ে গুদামে নিয়ে গেলেও বলা হয় মিটার পাস হয়নি। তখন ধান বাড়িতে ফেরত আনতে হয়। তাতে বাড়তি পরিবহণ খরচ দিতে হয়। তার চেয়ে বাজারে নিয়ে বেচাই ভালো।

আলাদিপুর ইউনিয়নের উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক মহিদুল ইসলাম বলেন, খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলেই খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। এক টন ধান গুদামে ঢুকাতে গেলে খাদ্যগুদামের শ্রমিকদের ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দিতে হয়। পরিবহণ খরচ যায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এছাড়া আরো বাড়তি কিছু খরচ তো আছেই। গরিব কৃষকদের জন্য খাদ্যগুদামের চেয়ে বাজারই ভালো।

উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক নাসিম আল আকতার জানান, এ পর্যন্ত গুদামে তিন হাজার ৬৩২ দশমিক ৭৯০ টন চাল সংগ্রহ করা গেছে। এছাড়া মাত্র তিনজন কৃষকের কাছ থেকে দুই টন করে ছয় টন ধান সংগ্রহ করা গেছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উদ্দিন বলেন, ধানের সরকারি দাম বাজারের দামের প্রায় কাছাকাছি। এ কারণে কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রি করতে আসছে না। প্রায় তিন মাসেও এক শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়নি। এ কারণে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। তবে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

মন্তব্য

Beta version