কক্সবাজারের ‘সোহেল’ মারা গেছে। তবে এই 'সোহেল' জনপ্রিয় কোনো ব্যক্তি নয়। বলছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সিংহরাজ সোহেলের কথা।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের সিংহের বেষ্টনীর ভিতরে হঠাৎ নিথর হয়ে যায় সে। একইদিন সন্ধ্যায় ২২ বছর বয়সী সিংহ ‘সোহেলের’ মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন সাফারি পার্কের তত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম।
এ ঘটনায় চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয় বলে জানান তিনি।
জিডিতে মাজহারুল উল্লেখ করেন, সাফারি পার্কের বয়স্ক সিংহ ‘সোহেল’ বুধবার সন্ধ্যায় মারা যায়। প্রকৃতিতে একটি সিংহ স্বাভাবিকভাবে ১৫-১৮ বছর বাঁচে।
‘মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে সিংহটি ২০০৪ সালে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে আনা হয়। তখন সেটির বয়স ছিল চার বছর। বিগত ৩-৪ বছর ধরে সিংহটি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল।’
সাফারি পার্কের এই তত্ত্বাবধায়ক বলেন, বার্ধক্যের সব লক্ষণ সিংহটির শরীরে প্রকাশ পাচ্ছিল। ২০১৯ ও ২০ সালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক পৃথকভাবে সিংহটির চিকিৎসা করতেন। তারাও পর্যবেক্ষণে সিংহটির বার্ধক্য ও আয়ুষ্কাল শেষের দিকে বলে তখন উল্লেখ করেছিলেন।
চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুপন নন্দী ও পার্কের ভেটেনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন মৃত সিংহের ময়নাতদন্ত করেন।
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় ১৯৯৯ সালে পথচলা শুরু ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের। ভেতর-বাইরে ৯০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে যাত্রা করা পার্কে বিপুল পরিমাণ মাদার ট্রিসহ (গর্জন) রয়েছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ। সপ্তাহের মঙ্গলবার ছাড়া বাকি ছয়দিন দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস মিশে যায় প্রাণীকুলের কোলাহলের সঙ্গে।
পার্কের ১৯টি বেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত আছে বিচিত্র সব প্রাণী। পার্কের ভেতরে পালিত হচ্ছে-হাতি, বাঘ, সিংহ, জলহস্তী, গয়াল, আফ্রিকান জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, ভাল্লুক, বন্য শুকর, হনুমান, ময়ূর, স্বাদু ও লোনা পানির কুমির, সাপ ও বনগরুসহ দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির হাজারো প্রাণী।
যা দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা এবং দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক।
মন্তব্য