-->
শিরোনাম

সুন্দরবন ভ্রমণে খরচ বাড়ায় বিপাকে ট্যুর অপারেটররা

খুলনা প্রতিনিধি
সুন্দরবন ভ্রমণে খরচ বাড়ায় বিপাকে ট্যুর অপারেটররা

পর্যটন খাতের মাঝপথে দ্বিগুণ পরিমাণ রাজস্ব বৃদ্ধি এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে নতুন করে কর আরোপ করায় সুন্দরবনের পর্যটন শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আগে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের বাইরে ১ দিনের জন্য একজন পর্যটকের রাজস্ব ছিল ৭০ টাকা, সেটি বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। অভয়ারণ্য এলাকায় ১ দিনের ফি ১৫০ টাকার জায়গায় ৩০০ টাকা করা হয়েছে। বেড়েছে বিভিন্ন যানবাহন প্রবেশের ফি।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন ভ্রমণে রাজস্ব বাড়ার এই প্রজ্ঞাপন জারি করে বন বিভাগ। সেদিন থেকেই নতুন রাজস্ব আদায় করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে সুন্দরবন ভ্রমণে রাজস্ব বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন।

রবিবার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম ডেভিড বলেন, ট্যুর অপারেটররা পর্যটন মৌসুমের শুরুতে বনের রাজস্বসহ সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্যুর প্যকেজের মূল্য নির্ধারণ করেন। পরে তা বাড়ানো সম্ভ হয় না।

বন বিভাগ এখন মৌসুমের মাঝখানে হঠাৎ আগের তুলনায় রাজস্ব দ্বিগুণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি করেছে। এছাড়া এতে নতুন খাতেরও সৃষ্টি করা হয়েছে। বর্ধিত হারে রাজস্ব পরিশোধ করতে আমরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। ফলে তা পর্যটন শিল্পের বিকাশকে ব্যাহত করবে।

তিনি আরো বলেন, ইতোপূর্বে রাজস্ব হার বৃদ্ধি ও তা বাস্তবায়নে বনবিভাগ ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। কিন্তু এবার তা করা হয়নি। আমরা জানার পর স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে রাজস্ব হার পুনর্নির্ধারণ করার আবেদন জানিয়ে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।

তিনি পর্যটনকে বাধাগ্রস্ত না করে সমস্য সমাধানের উপায় খোঁজার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার ও যুগ্ম সম্পাদক কচি জমাদ্দার উপস্থিত ছিলেন।

বন বিভাগে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, প্রমোদ ভ্রমণে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্যে হেলিকপ্টার ব্যবহার করলে বনবিভাগে নিবন্ধিত হেলিকপ্টারের জন্যে ২০ হাজার ও অনিবন্ধিতের জন্যে ৫০ হাজার টাকা ফি দিতে হয়।

এছাড়া ১০০ ফুটের ঊর্ধ্ব মাপের লঞ্চের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ১ হাজার ৫০০ টাকা ও অনিবন্ধিতদের জন্য ৬ হাজার টাকা, ৫০ থেকে ১০০ ফুট মাপের লঞ্চ নিবন্ধিত ১ হাজার ২০০ ও অনিবন্ধিত সাড়ে ৪ হাজার টাকা, ৫০ ফুটের কম মাপের লঞ্চ নিবন্ধিত ৭৫০ টাকা ও অনিবন্ধিত ৩ হাজার টাকা।

দেশি নৌকা নিবন্ধিত ১৫০ টাকা ও অনিবন্ধিত ৩০০ টাকা। স্পিডবোট নিবন্ধিত ৩ হাজার ও অনিবন্ধিত ৬ হাজার টাকা এবং জালিবোট (ট্যুরিস্ট বোট) নিবন্ধিত ৩৫০ টাকা ও অনিবন্ধিতদের জন্য ১হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

এসব নৌযানের আগের হার ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ও ৪ হাজার টাকা, ৮০০ ও ৩ হাজার টাকা, ৫০০ ও ২ হাজার টাকা, ১০০ ও ২০০ টাকা, ২ হাজার ও ৪ হাজার টাকা এবং ২০০ টাকা ও ৪০০ টাকা।

এছাড়া একদিনের বেশি অবস্থানের জন্যে লঞ্চপ্রতি দৈনিক নিবন্ধিত ৬০০ ও অনিবন্ধিতদের ১ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। এ হার আগে ছিল ৩০০ ও ৫০০ টাকা।

পর্যটকদের অভয়ারণ্য ছাড়া সমগ্র বন ভ্রমণে প্রতিজনের প্রতিদিন দেশি ১৫০ টাকা ও বিদেশি ২ হাজার টাকা ফি হার ধার্য করা হয়েছে। পূর্বে এ হার ছিল ৭০ টাকা ও ১ হাজার টাকা।

প্রতিবছর একবার বনের দুবলার চরে তিন দিনের রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে তীর্থ যাত্রার ফিও বাড়ানো হয়েছে। এ ফি বাড়িয়ে তা দেড়গুণ করা হয়েছে।

বনের কটকা, কচিখালী ও নীলকমলে রেস্ট হাউজে অবস্থান করা যায়। এবার অফিসিয়ালি সেগুলোর ভাড়া ঘোষণা করা হয়েছে।

কটকায় দেশিদের জন্য দৈনিক প্রতি কক্ষের ভাড়া ২ হাজার ও সম্পূর্ণটার জন্য ৪ হাজার টাকা। এছাড়া বিদেশিদের জন্য ৫ ও ১০ হাজার টাকা।

কচিখালী দেশিদের জন্য কক্ষ ৩ হাজার ও সম্পূর্ণ ১০ হাজার টাকা এবং বিদেশিদের জন্য ৫ ও ১৫ হাজার টাকা। নীলকমলে দেশিদের জন্য প্রতি কক্ষ ৩ হাজার ও সম্পূর্ণ ১২ হাজার টাকা এবং বিদেশিদের জন্য ৫ ও ২০ হাজার টাকা।

মন্তব্য

Beta version