-->
শিরোনাম
ফসলি জমির মাটি রাস্তায়

বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হচ্ছে না ক্ষতিপূরণ

বেন ইয়ামিন মুক্ত, মেহেরপুর
বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হচ্ছে না ক্ষতিপূরণ

রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন ঠিকাদার। ওই টেন্ডারে রাস্তায় মাটি ভরাটের জন্য দেওয়া হয়েছে আলাদা বরাদ্দ। তবে ক্ষতিপূরণ না দিয়েই পাশের ফসলি জমির মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে রাস্তা। দেওয়া হচ্ছে সরকারি কাজের দোহাই। মাটি কাটতে বাধা দিলে ভুক্তভোগীদের দেওয়া হচ্ছে হুমকি। ঘটনাটি মেহেরপুর সদরের আমদহ থেকে আশরাফপুর গ্রামের সংযোগ সড়কের।

জানা যায়, জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে সদরের আমদহ থেকে আশরাফপুর গ্রামের সংযোগ সড়কের দুপাশে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তার তিন ফুট করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য গত বছরের আগস্টে দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। ১ কোটি ৬৯ লাখ ১৭ হাজার ৫৬০ টাকার কাজটি পায় কুষ্টিয়ার সৈকত এন্টারপ্রাইজ। পরে কাজটি সাব টেন্ডারে কিনে নেয় মেহেরপুরের নুর ইসলাম এন্টারপ্রাইজ।

রাস্তার পাশের মাটি ভরাট করতে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অথচ না কিনে ব্যবহার করা হচ্ছে পাশের কৃষকদের জমির মাটি। ইতোমধ্যে রাস্তার পাশের জমিগুলো থেকে ৮-১০ ফিট চওড়া করে মাটি তোলা হয়েছে। ফসলি জমিগুলো খালে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জমির মালিকরা।

আশরাফপুর গ্রামের কৃষক মাসুদুল ইসলাম। তিনি ভোরের আকাশকে বলেন, ‘আমার জমিতে গম বোনা ছিল। কোনো নোটিশ না দিয়েই পাশের জমিতে মাটি কাটছিল। পরে বাধ্য হয়ে অপরিপক্ব অবস্থায় সেই গম কেটে ফেলতে হয়েছে। আমার তিন মাসের পরিশ্রম ও ১২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

আমদহ গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘যে পরিমাণ গর্ত হয়েছে তা পূরণ করতে আমার ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই জমিতে আগের মতো উর্বরতা থাকবে না। আগামী কয়েক বছর ভালো ফলন পেতে বেগ পেতে হবে।’

এদিকে রাস্তা বাড়ানোর কাজ হলেও রাস্তায় থাকা গাছগুলো কাটা হয়নি। গাছগুলো থেকে যাচ্ছে বর্ধিতাংশের ভিতরে। ফলে রাস্তা বড় হলেও কাজে আসবে না। উপরন্তু দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। গাছগুলো কেটে রাস্তা বর্ধিত করলে তা ব্যবহার উপযোগী হবে বলে জানায় এলাকাবাসী।

এভাবে কাজ করার বিষয়ে ঠিকাদার নূর ইসলামের মুঠোফোনে বারবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। একাধিকবার তার অফিসে দেখা করতে গেলে সটকে পড়েন তিনি।

এ বিষয়ে এলজিআইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, গাছ কাটা অনেক জটিলতার বিষয়। আর মাটি কাটার বিষয়ে প্রশ্ন করলে- দরপত্রে কৃষকের জমি থেকে মাটি নেওয়ার বিষয়ে উল্লেখ নেই বলে স্বীকার করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক ড. মনসুর আলম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে গাছ রেখে রাস্তা বর্ধন কীভাবে করছে তা বোধগম্য নয়। আর কৃষকের মাটি নিলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

Beta version