-->
শিরোনাম

শফিকুলের ইলেকট্রিক ঢেঁকি

রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
শফিকুলের ইলেকট্রিক ঢেঁকি
রফিকুলের ইলেকট্রিক ঢেঁকি

দেশে প্রযুক্তির কল্যাণে সনাতন নানা পদ্ধতি প্রায় বিলুপ্ত। তবে আধুনিক যুগে প্রাচীন ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে কাজ করছেন কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি। তার তৈরি ইলেকট্রিক ঢেঁকি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

উদ্যমী এই শফিকুলের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের খামার বোয়ালী গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে।

গতকাল শনিবার সকালে শফিকুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ইলেকট্রিক ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থকে চাল বের করতে ব্যস্ত শফিক। পাঁচ থেকে ছয় ফুট লম্বা আকারের দুটি ঢেঁকি এশটি মোটরের সহায়তায় চলে। এতে সময় ও শ্রম দুটোই কম লাগছে।

মূলত ঢেঁকিছাঁটা চাল দেখতে লাল হলেও খেতে অনেক সুস্বাদু। স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় দেশে লাল চাল ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। অনলাইনে আসছে অর্ডার। কুরিয়ারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে চাল বিক্রি করে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন শফিকুল। প্রতি কেজি কাটারিভোগ চাল ৮৬ টাকা দরে বিক্রি করেন তিনি।

জানা গেছে, ২০০৬ সালে গাইবান্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন শফিকুল। ২০১০ সালে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার পাস করেন তিনি। এরপর ২০১৬ সালে কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি পাস করেন। প্রথমে একটি কোম্পানিতে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। তবে বাবার মৃত্যুর পর বাড়িতে এসে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। মেধা আর নিজস্ব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি করেছেন ইলেকট্রিক ঢেঁকি।

শফিকুল জানান, ইলেকট্রিক ঢেঁকি তৈরি করতে এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রযুক্তিগত বা কারিগরি সহায়তা পেলে এটি গ্রামীণ মানুষদের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ইতোমধ্যে তার এখানে ছয়জন কাজ করছেন।

তিনি আরো জানান, অনেকেই রাইস মিলে চাল সুন্দর দেখাতে ইউরিয়া সার ব্যবহার করেন। সেই চালের ভাত শরীরে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি করে। ফলে বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হতে হয়। ঢেঁকিছাঁটা চালে ফাইবার (আঁশ) নষ্ট হয় না। তাই এ চালের ভাত অনেকটাই পুষ্টিসমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যসম্মত। দিন দিন এ চালের চাহিদা বাড়ছে।

জেলা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রবীন চন্দ্র রায় বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের পাশে সব সময় বিসিক রয়েছে। ইলেকট্রিক ঢেঁকির বিষয়টি আপনার মাধ্যমে আজকে জানলাম। শফিকুল ইসলাম আসলে কী ধরনের ইলেকট্রিক ঢেঁকি তৈরি করেছে, সেটি দেখতে তার বাড়িতে যাব। পরিদর্শন করে ওই উদ্যোক্তাকে বিসিকের পক্ষ থেকে সব বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।’

মন্তব্য

Beta version