নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রভাবশালীদের সহায়তায় সরকারি সম্পদ দখলের মহোৎসব চলছে। সেই উৎসব থেকে রক্ষা পাচ্ছে না পৌরসভার টয়লেটও।
সৈয়দপুর-ঢাকা মহাসড়কের সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গাও দখল হচ্ছে প্রতিদিন। দখলকৃত এসব জায়গা ও রেল কোয়ার্টার ভেঙে তৈরি করা হচ্ছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। পরে তা লাখ টাকার বিনিময়ে হস্তান্তর করা হচ্ছে। সম্প্রতি পৌরসভার টয়লেট ও টয়লেটের জায়গা দখলের ঘটনা ঘটেছে। দখলকৃত জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে দোকান। ঘটনাটি পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের ওয়াপদা মোড় বাসস্ট্যান্ডে।
বাস যাত্রীদের প্রাকৃতিক কর্ম সারতে পৌর কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি টয়লেট নির্মাণ করে দেয়। সেই টয়লেট ও টয়লেটের জায়গা দখল করে সেখানে দোকান গড়ে তুলেছেন আলম নামের এক ব্যক্তি। টয়লেট দখল হয়ে যাওয়ায় বাসযাত্রীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। বিশেষ করে মহিলা বাসযাত্রীরা।
জানা গেছে, এ দখল কাজে সহযোগিতা করেছেন প্যানেল মেয়র-১ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহীন হোসেন।
আলমের ছেলে আলিফ হাসানের সঙ্গে কথা হওয়ার সময় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বাবা ওই প্যানেল মেয়রের ভোটের কর্মী ছিলেন। সেজন্য তাকে টয়লেট ও টয়লেটের জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে প্যানেল মেয়র শাহীন হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কোনো সরকারি জায়গা দখলে আমি সহযোগিতা করতে পারি না। তবে ওই টয়লেটটি ড্যামেজ হয়ে গেছে।’
প্যানেল মেয়রের সহযোগিতা করা বিষয়ে জানতে কথা হয় উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রক্ষক যদি ভক্ষককে সহযোগিতা করে, তা অত্যন্ত অনৈতিক। এমন কাজে কোনো জনপ্রতিনিধি জড়িত থাকলে অবশ্যই তার নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে বলে মনে করি।’
সংরক্ষিত আসনের এমপি রাবেয়া আলীমের মুখপাত্র ও আওয়ামীলীগ নেতা প্রকৌশলী একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ‘কোনো দখলবাজি সহ্য করা হবে না। আর কত দখল চলবে, এটি বন্ধ করতে হবে।’
সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বলেন, ‘দখল হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি বিষয়টি এখন দেখছি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম হুসাইন বলেন, ‘এ রকম অনেক টয়লেট আছে। দখলের বিষয়টি জানা নেই। তবে এই বিষয় প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না। আমি বিষয়টি দেখছি।’
মন্তব্য