-->
শিরোনাম

যেখানে পাথর ভেঙে জীবন চলে

মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়
যেখানে পাথর ভেঙে জীবন চলে
পাথর ভাঙার কাজ করছেন নারী শ্রমিকরা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক পাথর সংগ্রহ ও ভাঙার কাজে সম্পৃক্ত। এর প্রায় অর্ধেকের বেশি নারী শ্রমিক। প্রতিদিন সকাল ৮টায় এসব নারী শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। কাজ করেন সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত। তবে প্রতিদিন মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এসব নারী শ্রমিকরা। এছাড়াও টয়লেট নিয়ে বিপাকে পড়েন তারা। এসব নারী শ্রমিকের শিশু সন্তানদের রাখার জন্য নেই কোনো ডে-কেয়ার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাথর ভাঙার কাজ করে প্রতিদিন একজন নারী শ্রমিক সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পান। একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা পান ৫০০ টাকা। এ কারণে মন খারাপ নারী শ্রমিকদের। তাদের হয়ে কথা বলার যেন কেউ নেই। নিজেদের অধিকার নিয়েও কথা বলতে পারেন না এসব নারী শ্রমিকরা। নেই নারী দিবস সম্পর্কে কোনো ধারণা।

ভজনপুর এলাকার পাথর শ্রমিক রহিমা বেগম বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে টানাপড়েনের সংসারে হাল ধরতে বাধ্য হয়েই পাথর ভাঙার কাজ করতে হয়। আমরা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে কাজ শুরু করি এবং সূর্যাস্তের সামান্য আগে কাজ শেষ করি। সব মিলে ১০ ঘণ্টার মতো কাজ হয়। তবে দুপুরে এক ঘণ্টার বিরতি পাই। যদিও একই কাজ করে পুরুষরা আমাদের থেকে ২০০ টাকা বেশি পায়। বিষয়টি নিয়ে প্রচণ্ড মন খারাপ হয়।’

বাংলাবান্ধা এলাকার আসমা নামে এক পাথর শ্রমিক বলেন, ‘এই পাথর ভেঙেই আমাদের জীবন চলে। তবে আমরা পুরুষদের সঙ্গে একই কাজ করে মজুরি কম পাই। আমরা চাই পুরুষদের সমপরিমাণ টাকা যেন আমাদেরও দেওয়া হয়।’

স্থানীয় এনজিও পরস্পরের নির্বাহী পরিচালক আকতারুন নাহার সাকি বলেন, নারী-পুরুষ যখন সমানভাবে সময় দিচ্ছে তাহলে অবশ্যই মজুরি সমানভাবে হতে হবে। আর তা না হলে আইনের এই সুবিধা থেকে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, তারা যেন নারী শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুযায়ী ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ করে সঠিক মজুরি দেন।‘

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একেএম ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ‘নারী শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

মন্তব্য

Beta version