কুমিল্লার হোমনায় জাহিদ হাসান নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যা করে মুক্তিপণ দাবি করা তিন বন্ধুর আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুর দুইটায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৪ এর বিচারক মিসেস সেলিনা আক্তার এই রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান বাবুল ও মো. আবদুল্লাহ আল নোমান।
রায় ঘোষণার সময় আসামি মো. খাইরুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও অপর দুই আসামি জিহাদ হোসেন ও এমদাদ হোসেন হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
জাহিদ উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের সাপলেজি গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আক্তারুজ্জামানের ছেলে ও দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন উপজেলার ভিটিকালমিনা গ্রামের মজিবুরের ছেলে মো. জিহাদ হোসেন (১৯), হাফেজ হোসেনের ছেলে এমদাদ হোসেন (১৭) এবং মুরাদনগর উপজেলার ও দুলালপুরের ভাড়াটিয়া শাহ জালালের ছেলে মো. খাইরুল ইসলাম (১৭)।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের গত ৪ নভেম্বর জাহিদ হাসানকে বাড়ির পাশ থেকে কৌশলে অপরহরণ করে তারই তিন বন্ধু। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজির পর গত ৫ নভেম্বর হোমনা থানায় নিখোঁজের পরিবার একটি ডায়েরি করে। এরপর অপহরণকারীরা ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিহতের চাচা মাসুদ রানার মোবাইলে কল দিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
চাচা মাসুদ রানা জাহিদের পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি থানা পুলিশকে জানায়। এরপর মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জিহাদ হোসেন, এমদাদ ও খাইরুলকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুক্তিপণ দাবি ও জাহিদকে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখার কথা স্বীকার করে।
পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দুলালপুর চন্দ্র মনি উচ্চ বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে জাহিদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের বাবা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমার ছেলেকে তারা নৃশংসভাবে মেরেছে। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমি তাদের মৃত্যুদণ্ড আশা করেছিলাম।’
মন্তব্য