-->
শিরোনাম

নওগাঁয় তিনজনকে হত্যার দায়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁয় তিনজনকে হত্যার দায়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

নওগাঁর বদলগাছিতে আলোচিত তিন হত্যা মামলায় নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলার অপর ১০ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক মাহমুদুল হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন পাওয়া আসামির প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আট বছর পর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- বদলগাছীর উজালপুর গ্রামের সাইদুল, আইজুল হক, হেলাল হোসেন, জালাল হোসেন, বেলাল হোসেন, জায়েদ, আবুল হোসেন, মোস্তফা ও সোহাগ আলী।

এদের মধ্যে সাইদুল, জায়েদ ও সোহাগ পলাতক রয়েছেন। অন্যরা রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে আসামি হাসেম আলীর। তিনি বদলগাছীর উজালপুর গ্রামের বাসিন্দা। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক মাহমুদুল হাসানা বলেন, ‘সামান্য বিষয় থেকে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড মর্মান্তিক। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য সমাজে একটা বার্তা দেওয়া উচিত।’

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে বদলাছীর উজালপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও তার ভাই আমজাদ হোসেন ও শ্যালক আব্দুল ওয়াদুদের পরিবারের সঙ্গে প্রতিপক্ষ হাসেম আলী, সাইদুল, আইজুল ও হেলালসহ অন্য আসামিদের বিরোধ চলছিল।

ওই বিরোধের জেরে জমির দখলকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালের ৬ জুন বিকেল তিনটার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শহিদুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন ও আব্দুল ওয়াদুদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন।

এ ঘটনায় নিহত শহিদুলের ছেলে ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে ২৪ জনের নামে বদলগাছী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার আগেই অভিযুক্ত তিনজনের মৃত্যু হয়।মামলাটি তদন্ত করে ২০ জনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় বাদী ও বিবাদী পক্ষের ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেন।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোজাহার হোসেন ও আব্দুল্লাহেল বাকী। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী রফিকুল ইসলাম।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোজাহার হোসেন বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ বাদীপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় ২০ আসামির মধ্যে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন আদালত।’

মামলার বাদী নিহত শহিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এই রায়ে আমরা খুশি। অবিলম্বে আসামিদের সাজা কার্যকর হলে আবার বাবা, চাচা ও মামার আত্মা শান্তি পাবে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।’

মন্তব্য

Beta version