টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ভাদ্রা ইউনিয়নের টেংরিপাড়া এলাকায় স্টিল বেইলি ব্রিজ মাসে একাধিক বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এর সংস্করণের কাজ চলেছে ঢিলেঢালাভাবে। ফলে স্থায়ীভাবে সংস্কার হচ্ছে না।
এছাড়াও স্থানীয়দের অভিযোগ অতিরিক্ত ওজনের ভারী যানবাহন চলাচল ও ব্রিজ মেরামত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের গাফলতিতে ব্রিজের টেকসই সংস্কার হচ্ছে না। এতে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল অস্বাভাবিকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে জনসাধারণের চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ভারী যানসহ পাটাতন ভেঙে ব্রিজ বিকল হলে সংস্কার করে চালু করা হয়েছে। কিন্তু রোববার ব্রিজের পাটাতন পুনরায় ভেঙে যাওয়ায় ব্রিজ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রতিদিন এ ব্রিজ দিয়ে চলাচলকারী রিফাত মিয়া বলেন, ‘আমরা ব্যাপক কষ্টে চলাচল করছি। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারো ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বার বার এটি মেরামত করে কিন্তু স্থায়ী সংস্কার হচ্ছে না। এছাড়াও অতিরিক্ত ওজনের ভারী যানবাহন চলাচল করায় ব্রিজটি আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অফিস সূত্র জানায়, ব্রিজটি অনেক পুরাতন এবং অতিরিক্ত ওজনের ভারী যান চলাচল করায় বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি ব্রিজ টেকসই সংস্কারের জন্য। অতিরিক্ত ওজনের ভারী যান চলাচলের বিষয়টি সঠিক তদারকির জন্য নাগরপুর থানায় লিখিত দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত ওজনের ভারী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলে সেতুর সংস্কার টেকসই হবে।
আফরোজা নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী বলেন, ‘যখন স্কুলে যাই এ ব্রিজের উপর দিয়ে তখন মনে হয় উপর থেকে নিচে পরে গেলাম। খুব আতঙ্কের মাঝে এ ব্রিজ পার হতে হয়। তাই তাড়াতাড়ি ব্রিজটি নতুন করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই।’
বাবলু নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালক বলেন, ‘এ ব্রিজ বিকল হওয়ার কারণে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হয়। আগে সারাদিন গাড়ি চালাতাম। ভয়ে এখন তো গাড়ি চালাতে পারি না। কারণ টাঙ্গাইল গিয়ে গ্যাস নিতে হয়। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাবার ফলে এখন আর গ্যাস নিতে পাড়ছি না ।’
আঞ্চলিক এই মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশের দৈর্ঘ্য ৪০ কিলোমিটার এবং মানিকগঞ্জ অংশের দৈর্ঘ্য ১৮.৫০ কিলোমিটার উন্নীতকরণ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬৩৫.১০ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। উক্ত প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের আওতায় প্রথমত সড়কটি ১০ দশমিক ৩০ কিলোমিটারে উন্নীত করে পুন:নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ ও কালভার্টের পরিবর্তে নতুন করে ১৪টি ব্রিজ ও ২১টি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। সাতটি কালভার্ট সম্প্রসারণ করা হবে। এছাড়াও সড়কটিতে বিদ্যমান বাঁকসূমহ সমীকরণের মাধ্যমে সড়কের নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানো হবে।
মন্তব্য