-->

আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন

রেজাউল করিম লিটন, চুয়াডাঙ্গা
আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন
পোকা থেকে আমের মুকুলকে রক্ষা করতে স্প্রে দিচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার এক আমচাষি

থোকায় থোকায় দুলছে আমের মুকুল। মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা কওে তুলছে চারদিক। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস নাড়া দিচ্ছে বাগান মালিকের হৃদয়ে। আনন্দে আত্মহারা তারা। ইতোমধ্যে মুকুলের ডগায় ডগায় আমের গুটি আসতে শুরু করেছে। বাম্বার ফলনের আশায় চুয়াডাঙ্গার আমচাষিরা।

জেলার প্রায় সব আমগাছ মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। এসব মুকুলের ডগায় ডগায় দেখা মিলছে আমের গুটির। আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। সেই সোনালি স্বপ্নকে বুকে ধারণ করেই বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার চাষিরা। তবে সম্প্রতি শিলাবৃষ্টিতে জেলার বেশকিছু এলাকায় আমের মুকুলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার পরও এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আমচাষি ওমর আলী। সাত বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছেন তিনি। ভোরের আকাশকে তিনি বলেন, ‘আম্রপালি জাতের আমগাছ লাগিয়েছি। এ বছর বাগানে প্রচুর মুকুল এসেছে। ডগায় ডগায় দেখা মিলছে গুটির। আশা করছি এবার ফলনও ভালো হবে।’

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি আমের জন্য বিখ্যাতের তালিকায় নিজের স্থান করে নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা। এ জেলায় উৎপাদিত হিমসাগর, আম্রপালি, লেংড়া, ফজলি, মল্লিকা, বারী আম-৪ ও বারোমাসি কাঠিমন জাতের আমের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।

আবহাওয়াজনিত কারণে এবার একটু দেরিতে মুকুল এসেছে গাছে। তবে আম বাগানগুলোয় যে পরিমাণে মুকুল এসেছে তাতে করে আমের ফলনও প্রচুর হওয়ার আশা সংশ্লিষ্টদের।

বাগানগুলোয় আমের মুকুল দেখে কৃষকদের মতো প্রচুর আম উৎপাদন হওয়ার আশা করছেন জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। বাগানের গাছ থেকে সর্বোচ্চ ফলন পেতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর সদর উপজেলায় ৭৪২ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ৭৯৫ হেক্টর ও জীবননগরে ৬১২ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার টন।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ‘সম্প্রতি শিলাবৃষ্টিতে জেলার বেশকিছু এলাকায় আমের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। আবার কিছু কিছু গাছে এ বছর আমের “অফ ইয়ার” পড়েছে। সেগুলোতে এ বছর মুকুল আসবে না। বাগান পরিচর্যাসহ আমচাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এবার জেলার আমবাগানগুলোয় যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তা থেকে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।’

মন্তব্য

Beta version