-->
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি

চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরা হলো না প্রবাসী হাতেম আলীর

বিল্লাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ
চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরা হলো না প্রবাসী হাতেম আলীর
স্বজনদের খোঁজে শীতলক্ষ্যা পাড়ে নিখোঁজের স্বজনেরা

কুয়েত প্রবাসী হাতেম আলী। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত এক মাস আগে কুয়েত থেকে মুন্সীগঞ্জের বাড়িতে ফিরেন তিনি। চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকাতে যান তিনি।

রোববার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার জন্য ‘এম এল আফাজ উদ্দিন’ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চে উঠেন হাতেম আলী। তবে আর বাড়ি ফেরা হলো না তার। শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় হাতেম আলীকে বাহন করা লঞ্চটি। এরপর থেকেই নিখোঁজ তিনি।

আরো পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: আধা কিলোমিটার দূরে মিলল যুবকের মরদেহ

নিখোঁজ হাতেম আলীর খোঁজে শীতলক্ষ্যা পাড়ে এসেছে তার মেয়ে কাকলী। বাবার খোঁজে দিশেহারা তিনি। কিছুক্ষণ পর পর চোখে অশ্রু এনে পাড়ে বসে রয়েছেন কাকলী।

পরিবারের সদস্যদের না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন নিখোঁজের স্বজনেরা

 

তিনি বলেন, ‘আমার বাবার মোবাইল বন্ধ পাইছি। টিভিতে দেখি মুন্সীগঞ্জের লঞ্চ ডুইবা গেছে। নদীর পাড়ে আইসা দেখি উদ্ধারের কাজ চলতাছে। আমার বাবারে পাইতাছি না, আমার বাবারে আইনা দেন। বাবাকে জীবিত অথবা তার মরদেহ চাই।

কাকলী আরো বলেন, ‘বাবার সঙ্গে মায়ের সর্বশেষ কথা হয় বেলা ১২টায়। এরপর থেকেই বাবার ফোন বন্ধ পাই।’

আরো পড়ুন: স্ত্রীর হাত বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি তাহের

রোববার দুপুরে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ‘এম এল আফসার উদ্দিন’ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজন নারী, দুজন শিশু ও তিনজন পুরুষ।

দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা পর সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে উদ্ধার করে পাড়ে আনে। তবে লঞ্চের ভেতর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের উদ্ধারে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

লঞ্চডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে ডুবুরিরা

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম জানান, রাত ১০টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ঘটনাস্থলে আসে। রাতভর চেষ্টার পর ভোর সোয়া ৫টার দিকে আলামিন নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যা পাড়ে আনা হয় লঞ্চটিকে। পরে উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো লঞ্চটিতে তল্লাশি চালায়। তবে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।

আরো পড়ুন: ১৫ ঘণ্টা পর লঞ্চ উদ্ধার, মরদেহের খোঁজে অভিযান অব্যাহত

তিনি বলেন, ‘নদীতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের উদ্ধারে নদীর তলদেশে ও নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তল্লাশি করা হবে।’

শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ‘এম এল আফসার উদ্দিন’ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি উদ্ধার করে পাড়ে আনা হয়েছে

 

লঞ্চডুবির এ ঘটনায় তদন্ত করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আরো পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: চালকসহ আটক ৯, তদন্ত কমিটি গঠন

মন্তব্য

Beta version