নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে লঞ্চ মালিকের মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতটি নৌ-রুটে ৭০টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন লঞ্চ মালিক সমিতি।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল ও যাত্রী পরিবহণ সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জোনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান রাজা, সহ-সভাপতি অহিদুজ্জামান, নুরুল আমিন কাজল, সদস্য আলমগীর মিয়া প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদীর প্রস্থতা কমেছে। শিল্প-কারখানার কারণে ভারী জাহাজ চলাচলত শতভাগ বেড়ে গেছে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিআইডব্লিউটিএ। যার কারণে প্রায়ই নৌ-দুর্ঘটনা ঘটছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, এ পর্যন্ত পাঁচটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। যেকোনো নৌ-দুর্ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ আগে মামলা করে। তাদের সেই মামলায় কখনো ধাক্কা দেওয়া নৌযানের মালিককে আসামি করা হয় না। লঞ্চ মালিকেরা মামলা করতে চাইলেও তারা মামলা করতে পারে না। আমি মনে করি এটা ম্যানেজ মামলা।
অভিযোগে আরো বলা হয়, আমরা বার বার প্রতিবাদ করার পরও কোনো কাজ হয়নি। বরং যেই লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে ডোবানো হলো সেই মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হলো।
তিনি অভিযোগ করেন, রোববারের লঞ্চডুবির ঘটনায় বন্দর থানায় লঞ্চের মালিক কর্তৃপক্ষ মামলা করতে গেলেও মামলা নেওয়া হয়নি। নৌ-পুলিশের তদন্ত শেষে মামলা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, মামলা করার দায়িত্ব ডিজি শিপিং কর্পোরেশনের, তারা তা না করে জড়িতদের বাঁচাতে বিআইডব্লিউটিএ সব মামলা করে থাকে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতটি রুটে চলাচলকারী সব লঞ্চের সার্ভে রিপোর্ট রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা নদী বন্দরের পরিচালক রফিকুল ইসলাম মৌখিকভাবে স্থানীয় বিআইডব্লিউটি’র মাধ্যমে আজ সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি দ্রুত চলাচলরত লঞ্চ পুনয়ায় চালুর অনুমতি প্রদানে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল জানান, শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌ-দুর্ঘটনারোধে ছোট লঞ্চ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
মামলা না নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগ দেওয়ায় মামলা নেওয়া হয়নি। একটি দুর্ঘটনায় একটি মামলা হবে। নৌ-পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে লঞ্চ মালিক পরিপূর্ণ মামলা দিলে মামলা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য