-->
শিরোনাম

৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে পুত্রবধূ বানালেন শিক্ষিকা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে পুত্রবধূ বানালেন শিক্ষিকা
বাল্যবিয়ের শিকার স্কুলছাত্রী শারমিন খাতুন

হাতে মেহেদি রং নিয়ে ৫ম শ্রেণিতে ক্লাস করছেন বাল্যবিয়ের শিকার স্কুলছাত্রী শারমিন খাতুন (১১)। বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে অপকটে স্বীকার করে বলে, ‘গত এক সপ্তাহ আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে।’

ওই সময়ে একই ক্লাসে ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষিকা শামসুন্নাহার। তার বিরুদ্ধেই ওই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিজের দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সাংবাদিক পরিচয়ে স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে নিজের ছেলের বাল্যবিবাহ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ির অবস্থা খুব ভাল না। মায়ের খুব শরীর খারাপ। তার ইচ্ছা নাতি ছেলের বউ দেখার। মূলত মায়ের ইচ্ছাপূরণে এ বিয়ে দিয়েছি। তবে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি।’

অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামসুন্নাহার

ঘটনাটি সদর উপজেলার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। একজন শিক্ষিকার এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক হয়েছেন সচেতন মানুষ।

বাল্যবিয়ের শিকার শারমীন খাতুন সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার দিনমজুর অসোক আলীর মেয়ে।

জানা যায়, গত ২০ মার্চ শামসুন্নাহারের ছেলে আব্দুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় শারমিনের। বেগমপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে পড়িয়েছেন।প্রথম কয়েকদিন বিষয়টি জানাজানি না হলেও ঘটা করে বর-বধূ ছোটশলুয়া গ্রামের শশুরবাড়িতে গেলে লোকমুখে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে ।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। বিয়ের বিষয়টি জানি না। তবে একজন স্কুল শিক্ষিকার এ ধরনের অপরাধ কাম্য নয়।’

বিয়ে পড়নো কাজি মফিজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন।

বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘বেগমপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ বদ্ধপরিকর। একজন স্কুল শিক্ষিকা কিভাবে এ ধরনের কাজ করতে পারে আমার বুঝে আসে না।’জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষিকার এই বিষয়টি আমাদের দেখার দায়িত্ব না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে হবে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুইয়া বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মন্তব্য

Beta version