-->
শিরোনাম

খুলনায় মাহেন্দ্র চালক রিপন হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনায় মাহেন্দ্র চালক রিপন হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
প্রতীকী ছবি

খুলনায় মাহেন্দ্র চালক শেখ ওহিদুর রহমান রিপন হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ এবং বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার ইলচ্চা বাজার সা‌দির চর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ’র ছেলে মোহাম্মদ নুর ইসলাম, একই এলাকার হরিদাসের ছেলে জনি দাস, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার ফল সমস্যা বাজার এলাকার আব্দুর রউফ সিকদারের ছেলে রনি শিকদার ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ মাসুদ রানা মোল্লা। রায় ঘোষণার সময় সবাই পলাতক ছিলেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী জানান, আসামিদের মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও মামলার বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এর মধ্যে দস্যুতার অভিযোগে প্রত্যেকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া লাশ গুমের অপরাধে প্রত্যেককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ওহিদুর রহমান রিপন একজন মাহেন্দ্র চালক। তিনি সাতক্ষীরা জেলার লাবশা এলাকার শেখ তৌ‌হিদুর রহমা‌নের ছে‌লে। ২০১৬ সা‌লের ১১ জানুয়া‌রি সকা‌লে তিনি গাড়ি চালা‌নোর উদ্দে‌শে বা‌ড়ি থে‌কে বের হন। রা‌তে বা‌ড়ি না ফিরলে প‌রিবারের মানুষ চি‌ন্তিত হ‌য়ে প‌ড়েন।

‘প‌রের দিন তার ছোট ভাই জান‌তে পা‌রেন, লবণচরা থানা এলাকার একটি ক্ষেতে এক মাহেন্দ্র চাল‌কের মরদেহ পাওয়া গে‌ছে। পরে খুলনায় গিয়ে তিনি মরদেহ শনাক্ত ক‌রেন। মরদেহ দাফন শে‌ষে জান‌তে পা‌রেন, গোপালগঞ্জের কা‌শিয়া‌নী থে‌কে মাহেন্দ্রসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। প‌রের‌ দিন তি‌নি লবণচরা থানায় চারজ‌নের নাম উল্লেখ ক‌রে মামলা ক‌রেন।

‘ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টার দি‌কে আসা‌মিরা পূর্ব প‌রিকল্পনা অনুযা‌য়ী ৭০০ টাকা চু‌ক্তি‌তে মাহেন্দ্র ভাড়া নেয়। রাত ৯টার দি‌কে নগরীর লবণচরা থানার ডা. দিপু সা‌হে‌বের জ‌মির কাছে পৌঁছ‌লে আসা‌মি মাসুদ ও র‌নি র‌শি দি‌য়ে চালককে শ্বাস‌রোধ করার চেষ্টা ক‌রে। শ্বাস‌রো‌ধে তার মৃত্যু না হ‌লে নুর ইসলাম ছু‌রি দি‌য়ে আঘাত কর‌তে থাকেন। মৃত্যু নি‌শ্চিত ক‌রে আসা‌মিরা মরদেহ ফে‌লে মা‌হেন্দ্র নি‌য়ে পা‌লি‌য়ে যায়’, বলেন কাজী সাব্বির আহমেদ।

পরে গোপালগঞ্জ এলাকার কা‌শিয়া‌নী পু‌লি‌শের চেক‌পো‌স্টে গি‌য়ে তারা আটক হয়। এক পর্যা‌য়ে তারা হত্যাকা‌ণ্ডের কথা পু‌লি‌শের কাছে স্বীকার ক‌রে। একই বছ‌রের ৩১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পু‌লিশ প‌রিদর্শক মীর আতাহার আলী চারজনকে আসা‌মি করে আদাল‌তে অভিযোগপত্র দা‌খিল ক‌রেন। মামলা চলাকালে ১৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। ওই মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

Beta version