-->
শিরোনাম

সারাদেশে ৮ মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের আমৃত্যু ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন

ভোরের আকাশ ডেস্ক
সারাদেশে ৮ মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের আমৃত্যু ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন

খুলনায় মাহেন্দ্র চালক শেখ ওহিদুর রহমান রিপন হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া কুষ্টিয়ায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের আমৃত্যু ও চারজনের যাবজ্জীবন; ঝালকাঠিতে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ও পিরোজপুরে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ

খুলনা

খুলনায় মাহেন্দ্র চালক শেখ ওহিদুর রহমান রিপন হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড, একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ এবং বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার ইলচ্চা বাজার সাদির চর গ্রামের মোহাম্মদ নুর ইসলাম, একই এলাকার জনি দাস, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার ফল সমস্যা বাজার এলাকার রনি শিকদার ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মোহাম্মদ মাসুদ রানা মোল্লা। রায় ঘোষণার সময় সবাই পলাতক ছিলেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী জানান, আসামিদের মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও মামলার বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এর মধ্যে দস্যুতার অভিযোগে প্রত্যেকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া লাশ গুমের অপরাধে প্রত্যেককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭০০ টাকা চুক্তিতে মাহেন্দ্র ভাড়া নেয়। রাত ৯টার দিকে নগরীর লবণচরা থানার ডা. দিপু সাহেবের জমির কাছে পৌঁছলে আসামি মাসুদ ও রনি রশি দিয়ে চালক ওহিদুর রহমানকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। শ্বাসরোধে তার মৃত্যু না হলে নুর ইসলাম ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা মরদেহ ফেলে মাহেন্দ্র নিয়ে পালিয়ে যায়।’

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অপহরণের পর কলেজছাত্র ইমরান শেখকে হত্যার দায়ে একজনের ফাঁসি, তিনজনের আমৃত্যু ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরের এ রায় দেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. শাহিদুর রহমান কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কোমরপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের ছেলে মেহেদি হাসান (২৫), একই উপজেলার আফাজউদ্দিনের ছেলে ওয়াদুদ রাজু (২২) ও কুষ্টিয়ার হাউজিং এলাকার ফয়জুল বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান জজ (২৬)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- খোকসা উপজেলার চক হরিপুর গ্রামের মুন্সি নাসির উদ্দিনের ছেলে অনিক হাসান (২২) ও কুমারখালীর আফাজউদ্দিনের ছেলে ওয়াদুদ রাজু (২২)।

এছাড়া কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আফাজ উদ্দীনের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে দুজনকে হত্যার মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই দুই আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় এই মামলার অন্য চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

আসামিদের উপস্থিতিতে কুষ্টিয়ার বিশেষ দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের শাহাদাৎ আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা জাহিদ (৫৫) এবং একই উপজেলার চামনাই গ্রামের মৃত বিদ্যান আলীর ছেলে জামিরুল ইসলাম ওরফে মরু (৫০)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আফাজ উদ্দিনের বাসায় বোমা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ওই সময় সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একটি মিটিং করছিল। বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যায়। আফাজ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

ঝালকাঠি

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় স্কুল শিক্ষক শাহজাহান হাওলাদার হত্যার দায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ মো. মাসুদুর রহমান। মঙ্গলবার বিকেলে দুই আসামির উপস্থিতিতে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার দক্ষিন চেঁচরি গ্রামের মো.আবদুল লতিফ হাওলাদার, সরোয়ার হোসেন খান এবং একই গ্রামের মো.আবদুস সালাম জমাদ্দার। আসামিদের মধ্যে সরোয়ার হোসেন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান মনু জানান, উপজেলার চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামের বাসিন্দা ও পীরখানজাহান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহজাহান হাওলাদারের সঙ্গে ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে আসামিদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ স্থানীয় জোড়াপোল বাজার থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের সময় বাড়ি আসার পথে কাঠালিয়া-কৈখালী সড়কে পৌঁছালে আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।

পিরোজপুর

পিরোজপুরের কাউখালীতে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী সালমা আক্তার ওরফে রিতা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলামের আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

মন্তব্য

Beta version