-->
শিরোনাম

ঝুঁঁকিপূর্ণ ঘোষণার ৯ বছরেও ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেই

রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধা
ঝুঁঁকিপূর্ণ ঘোষণার ৯ বছরেও ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেই
গাইবান্ধা সরকারি এতিমখানার ঝুঁঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবন

গাইবান্ধা সরকারি শিশু পরিবারের (বালক এতিমখানা) একমাত্র আবাসিক ভবন ২০১৩ সালে ঝুঁঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নত করে গণপূর্ত বিভাগ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ৯ বছরেও নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেইনি। ফলে আবাসন সংকটে এতিম শিশুদের গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। এমন অস্বস্তি পরিবেশে পড়ালেখার বিঘ্ন ঘটছে ও স্বাস্থ্যগতসহ নানা সমস্যায় ভুগছে তারা।

সরকারি শিশু পরিবার (বালক) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে জেলা শহরের সুন্দরজাহান মোড় এলাকায় এতিম শিশুদের থাকার জন্য দুই তলাবিশিষ্ট একটি আবাসিক (ডরমেটরি) ভবন নির্মাণ করা হয়।

২০১৩ সালের ৫ জুন তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. কাজী আনোয়ারুল হকসহ গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী ভবনটিকে ঝুঁঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেন।

এতিমখানার বারান্দার পলেস্তারা খুলে রড বেরিয়ে গেছে

 

এরপর এতিম শিশুদের স্থানান্তর করা হয় পাশের দুটি টিনশেড ঘর ও উপ-তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের বিভিন্ন রুমে। বর্তমানে তাদেরকে এক রুমেই তিন থেকে চারজন পর্যন্ত গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে।

সম্প্রতি গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়ক উঁচু করে নির্মাণ করায় প্রতিষ্ঠান চত্বর নিচু হয়ে গেছে। এ জন্য বর্ষাকালে রাস্তার সব পানি পুরো প্রতিষ্ঠান চত্বরে দীর্ঘ সময় জমে থাকে। পানি জমার কারণে সবাইকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠান চত্বরে মাটি ভরাট করে উঁচু করতে হবে।

আবাসিকে থাকা কয়েকজন এতিম শিশু জানায়, ঝুঁঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবনে থাকার সময় ভয় লাগত। কখন যে ভেঙে পড়বে সেই আশক্সকায় থাকতে হতো। এখন সেই সমস্যা না থাকলেও অন্য সমস্যা রয়েছে। এক রুমে তিন থেকে চারজন পর্যন্ত থাকতে হয়। এতে করে পড়াশোনায় মনোযোগে বিঘ্ন ঘটছে।

একজন অসুস্থ হলে অন্যরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে নানা সমস্যায় দিনযাপন করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে আয়রনযুক্ত পানি পান ও ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জোড় দাবি করেছে এতিম শিশুরা।

এতিমখানার সিঁড়ির নিচে পলেস্তারা ও ওয়াল ভেঙে পড়ে আছে 

 

গাইবান্ধা সরকারি শিশু পরিবারের (বালক) উপ-তত্ত্বাবধায়কের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পলাশবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সুফিয়ান বলেন, ‘১০০ আসনবিশিষ্ট এই শিশু পরিবারে এতিম শিশু রয়েছে ৭৯ জন। প্রায় ৯ বছর ধরে একেক রুমে তিন থেকে চারজন করে এতিম শিশুকে কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে। তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা দরকার। প্রতিষ্ঠান চত্বরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। সামান্য বৃষ্টি হলে পানির নিচে ডুবে যায় চলাচলের রাস্তা।’

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘১২টি জেলায় চারতলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এই তালিকায় রংপুর ও গাইবান্ধার নাম রয়েছে। এই নতুন ভবন নির্মাণকাজের প্রকল্প চলতি অর্থবছরেই ধরানো হবে বলে জানতে পেরেছি। আর সেটি এবারো না হলে এতিম শিশুদের আরো দীর্ঘদিন কষ্টে থাকতে হবে।’

মন্তব্য

Beta version