-->
শিরোনাম

অল্প সময়ে অধিক ফলন, তরমুজ চাষে লাভবান কৃষক

জহির রায়হান, বরিশাল ব্যুরো
অল্প সময়ে অধিক ফলন, তরমুজ চাষে লাভবান কৃষক

আবহাওয়া অনুকূলে ও অল্প সময়ে অধিক ফলন পাওয়ায় এবার দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজ চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাম্পার ফলনের পাশাপাশি দাম ভালো পাওয়ায় তরমুজ চাষে এখানকার কৃষকরা আগের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবে বলে আশাবাদী।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে (২০২১-২২) বিভাগের ৬ জেলায় ৪৬ হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে, যা গত মৌসুমের (২০২০-২১) চেয়ে ১১ হাজার ৭৬৩ হেক্টর বেশি।

চলতি মৌসুমে তরমুজের সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে পটুয়াখালী, বরগুনা এবং ভোলায়। তুলনামূলক কম চাষ হয়েছে বরিশাল, পিরোজপুর এবং ঝালকাঠিতে। এর মধ্যে পটুয়াখালীতে ২২ হাজার ৮৯০ হেক্টর, বরগুনায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর, ভোলায় ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর, বরিশালে ৬৪৬ হেক্টর, পিরোজপুরে ১০৬ হেক্টর এবং ঝালকাঠিতে ৪৮ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে।

নগরীর পাইকারি বাজার ঘুরে জানা গেছে, ৬-৭ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ১৩ হাজার টাকায় আর এর থেকে বড় ৮-১০ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় এবং ১০-১৫ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ২৫ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।

পটুয়াখালীতে এক চাষি ব্যবসায়ীদের দেখানোর উদ্দেশ্যে তরমুজ কেঁটেছেন  

 

ইদ্রিস শেখ নামে এক তরমুজ চাষি জানান, এ বছর আবহাওয়া তরমুজ চাষের অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। আর যারা আগেভাগে তরমুজ চাষ করে বিক্রি করেছেন তারা ভালো দাম পেয়েছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে তরমুজের মৌসুম শুরু হয়েছে। যা চলবে টানা মাস পর্যন্ত। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে এবার লাভের মুখ দেখবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তরমুজ চাষি মো. রফিক জানান, তিনি এক কানি জমিতে তরমুজ চাষে এক লাখ টাকার মতো খরচ করেছেন। ইতোমধ্যে সাড়ে তিন লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। ক্ষেতে আরও তরমুজ আছে।

বরিশাল ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি গণেশ দত্ত জানান, পাইকারি বাজারে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, দামও ভালো। বর্তমানে তরমুজের শ’ ১৩ হাজার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি বরিশালের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক তাওফিকুল আলম বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা তরমুজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। অল্প সময়ে অধিক ফলন হওয়ায় মৌসুমি ফলের মধ্যে তরমুজের কোনো বিকল্প দেখছেন না চাষিরা। ফলে প্রতিবছর তেমন কোনো ঝুঁকি ছাড়াই তরমুজ চাষ করছেন তারা।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে ১১ হাজার ৭৬৩ হেক্টর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। বিগত দিনের তুলনায় এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে।’

তাওফিকুল আলম বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তরমুজ চাষে কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা না হলেও দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তরমুজ উৎপাদন হয় বরিশাল অঞ্চলে। সারাদেশে বরিশাল অঞ্চলের তরমুজের চাহিদাও বেশি। আমরা আশা করছি, এ বছর সব কৃষকই লাভবান হবেন।’

মন্তব্য

Beta version