-->

টাকা না দিলে মেলে না ভিজিডির চাল

সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম
টাকা না দিলে মেলে না ভিজিডির চাল
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়

কুড়িগ্রামের রৌমারীর চরশৌলমারীর ভিজিডির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার সকালে চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভিজিডির চাল বিতরণকালে জনপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া চাল ওজনেও কম দেওয়া হয়।

চরশৌলমারীর ইউপি সচিব আতাউর রহমানের তথ্যমতে, এক মাসে ৩৬৫ জন সুবিধাভোগীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার ২৫০ টাকা।

ইউপি সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নে ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় রয়েছে মোট ৩৬৫ জন সুবিধাভোগী। প্রতিমাসে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। ৩০ কেজি ওজনের চালের বস্তা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা না মেনে বস্তা খুলে বিতরণ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী চাল বিতরণকালে একজন করে ট্যাগ অফিসার থাকেন। তবে তা না মেনে ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতেই এসব চাল বিতরণ করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।

চরশৌলমারী ইউনিয়নের ভিজিডি সুবিধাভোগী খাদিজা বেগম, খুরশিদা বেগমসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ‘ট্যাহা না দিলে মেলে না ভিজিডির চাল। শুরুতে দুই মাস জনপ্রতি ১০০ ট্যাহা করে নিছে, পরের মাস থিক্যা ৫০ ট্যাহা করে নিতাছে। এ ট্যাহা নাকি চালের বস্তা আনার খরচ। এ দুঃখ কারে কমু।’

টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ সচিব আতাউর রহমান বলেন, ‘১০০ টাকা নয়, জনপ্রতি ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।’ অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম সাইদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টা মোবাইল ফোনে বলা যাবে না। সামনে আসেন, এলে কথা হবে। বারবার বলছি সামনে আসেন, ফোনে বলব না।’

ট্যাগ অফিসার না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে ওই চেয়ারম্যান বলেন, ‘ট্যাগ অফিসারকে দাওয়াত করা হয়েছিল। তিনি বিতরণ শুরু করতে বলেও আর আসেননি।’অতিরিক্ত ট্যাগ অফিসার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার বন্ধের দিনে চাল বিতরণে আমি নিষেধ করেছিলাম। তারপরও তারা বিতরণ করেছেন। টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’

রৌমারী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন আকতার বলেন, ‘শুক্রবার এবং ট্যাগ অফিসার ছাড়া ভিজিডির চাল বিতরণ করতে সরকারিভাবে নিষেধ রয়েছে এবং পরিবহণ খরচ বাবদ কোনো দুস্থ নারীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে পারবে না।’

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘টাকা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই।’ ট্যাগ অফিসার না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দেখছি।’

মন্তব্য

Beta version