-->
শিরোনাম

নৌকা দিয়ে তৈরি সেতু

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা
নৌকা দিয়ে তৈরি সেতু
নদী পারাপারের জন্য মাঝিরা তাদের নৌকা সারিবদ্ধ করে সাজিয়ে তৈরি করেন সেতু

একপাশে কুমিল্লা; অন্যপাশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মাঝে বয়ে গেছে তিতাস নদী। পানি কমে যাওয়ায় কমেছে স্রোত, বেড়েছে কচুরিপানার দল। এমন অবস্থায় নদী পারাপারের জন্য মাঝিরা তাদের নৌকা সারিবদ্ধ করে সাজিয়ে তৈরি করেন সেতু। সেই সেতু দিয়ে লোকজন এপাড় থেকে ওপাড়ে যাতায়াত করেন। কচুরিপানা কমে গেলে নৌকা দিয়ে যাত্রী পারাপার করেন মাঝিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল ইউনিয়নের কান্দা পিপিড়িয়া বাজার। তার পাশেই তিতাস নদীর খেয়া। ওপাড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ বাজার। প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার মানুষ এপাড় থেকে ওপাড়ে যাওয়া-আসা করে।

একটা সেতুর অভাবে নিত্যদিনের কষ্টের কথা জানান কান্দা পিপিড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মো. হানদু মিয়া ও মো. নবীর হোসেন।

তারা জানান, এক থেকে দেড় মাইল দূরে একটি সেতু করা হয়েছে। ওই সেতু দিয়ে মানুষজন তেমন যাতায়াত করে না। কান্দা পিপিড়িয়ায় যদি একটি সেতু হয়, তা হলে দুই জেলার তিন উপজেলার হাজারো মানুষের উপকার হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. মাইন উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওপাড়ে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল সরকারি কলেজে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার শতাধিক শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি শাখায় অধ্যয়ন করেন। বলা যায় তারা ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ওই পাড়ে যায়। একটা সেতু হলে আমাদের সন্তানদের স্কুল কলেজ যাতায়াতে সহজ ও নিরাপদ হতো।

কান্দা পিপিড়িয়া ও ফরদবাদ ঘাটে খেয়া পারাপারে অন্তত ৪০টি নৌকা রয়েছে। প্রতিদিন অন্তত ২০ জন মাঝি নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করে। নদীতে কচুরিপানা জমে চলাচলে বাধা হলে মাঝিরা নৌকা সারিবদ্ধ করে সেতু তৈরি করেন। দিনভর যে টাকা জমা হয় সন্ধ্যায় তা সবাই মিলে ভাগাভাগি করে নেন।

ওই খেয়াঘাটের মাঝি আসলাম মিয়া জানান, নদীতে এখন পানি কম। প্রতিজন মানুষ পার হলে পাঁচ টাকা করে নেওয়া হয়। আর নদীতে কচুরিপানা জমলে সবার নৌকা একসঙ্গে করে পুল বানান তারা। সেখান থেকে যে টাকা ওঠে তা সবাই মিলে ভাগ করে নেন তারা।

ওই খেয়াঘাটের মাঝি তমিজ মিয়া বলেন, নদীত বেশি বা কম পানি দুটোতেই মানুষের কষ্ট। আমরা চাই একটা সেতু হোক।

শ্রীকাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার বলেন, ‘এইখানে একটি সেতু হলে কুমিল্লার মুরাদনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগর এই তিনটি উপজেলার ১৫ হাজার মানুষের চলাচলে অনেক সহজ হবে। এখানকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। আমরা চাই দুই উপজেলার মানুষের জন্য একটা সেতু হোক।’

একই কথা বললেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৯নং ফরদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘একটি সেতুর অভাব। যদি এদিকে একটি সেতু হয়, তাহলে কুমিল্লার মুরাদনগর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও কসবা ইউনিয়নের ১০/১৫ হাজার মানুষের জন্য খুবই উপকার হতো।’

 

মন্তব্য

Beta version