-->
শিরোনাম

প্রেমিকাকে নিয়ে ঘোরার খরচ জোগাতে নিজেকে অপহরণের নাটক!

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রেমিকাকে নিয়ে ঘোরার খরচ জোগাতে নিজেকে অপহরণের নাটক!
তামিম মিয়া

প্রেমিকাকে নিয়ে ঘোরাফেরা করার খরচ জোগাতে নিজেকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন তামিম মিয়া (২১) নামে এক তরুণ। বুধবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ শহরে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পরে পুলিশ কাউন্সেলিং শেষে তামিমকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

তামিমের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের উপজেলার গোবরিয়া-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর ভাটিপাড়া গ্রামে।

তামীমের মা আফিয়া খাতুন জানায়, তামিমের বাবা বেঁচে নেই। তাই তিনি নিজে সংসার চালান। তামিম পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর আর পড়েনি। কোনো কাজও করে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে কাছ থেকে টাকা নিতেন।

তিনি আরো জানান, গত শনিবার তামিম তাকে জানায়, যে এই রমজান মাসে ঢাকায় জুতার কারখানায় কাজ করবে। ঈদে টাকা কামিয়ে বাড়ি ফিরবে। এ জন্য তামিম তার কাছে নগদ ২৫ হাজার টাকা চায়। ছেলের এমন কাজে যাওয়ার আগ্রহ দেখে তিনি খুশি হয়ে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ২০ হাজার টাকা তামিমকে দেন।

গত পাঁচ দিন আগে তামিম ঢাকায় জুতার কারখানায় কাজ করবে বলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাতে একটি নাম্বার থেকে ফোন আসে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছে। ফোনের ওই পাশ থেকে একটি মেয়ে কণ্ঠ জানায়, যদি ছেলেকে জীবিত চায় তাহলে দ্রুত এক লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে। দ্রুত টাকা পাঠাতে না পারলে তামিমকে মেরে ফেলা হবে বলে জানায়।

ছেলেকে বাঁচাতে প্রতিবেশীদের কাছে টাকা চাইতে গিয়ে ব্যর্থ হন। শেষে প্রতিবেশীদের পরামর্শে কুলিয়ারচর থানায় গিয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতা চান তিনি। পুলিশ গতকাল বুধবার কিশোরগঞ্জ শহরে থেকে উদ্ধারের পর তিনি জানতে পারেন, প্রেমিকাকে নিয়ে ঘোরাফেরার জন্য তামিম অপহরণ নাটক সাজিয়েছিলেন।

তামিমের মা আফিয়া খাতুন আরো বলেন, ‘আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা সংসারে খরচ করি। বিভিন্ন সময় ছেলের চাহিদা মেটাতে গিয়ে অনেক কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। এখন আমার তিন বেলার খাবার জোগাড় করতে খুব কষ্ট হয়।’

কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘অপহরণটি ছিল মূলত নাটক। আসল ঘটনা হলো প্রেমিকার সঙ্গে ঘোরাফেরার খরচ যোগতেই তামিম এই অপহরণ নাটক সাজিয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় তার অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ধরার পর তামিম প্রকৃত ঘটনা খুলে বলেছে। পরে কাউন্সেলিং করে তাম মায়ের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।’

মন্তব্য

Beta version