-->
শিরোনাম

টাঙ্গাইলে দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজ মসজিদ

জুয়েল রানা, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজ মসজিদ
দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজ মসজিদ

টাঙ্গাইলে ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ২০১ গম্বুজ মসজিদ। মসজিদটির পশ্চিমাংশে উত্তর-দক্ষিণে বয়ে গেছে যমুনা নদীর শাখা ঝিনাই নদী। এটি মসজিদের সৌন্দর্যকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। দোতলার এই মসজিদটির প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ মণ পিতল। এখানে একসঙ্গে ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন।

টাঙ্গাইল সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে গোপালপুর থানা সদর। সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে নগদা শিমলা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ২০১ গম্বুজ মসজিদটি অবস্থিত। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া বেগম। নির্মাণাধীন মসজিদটিতে ২০১৮ সাল থেকে পবিত্র ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দ্বিতল এই মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের উন্নত মানের টাইলস, যা মিশর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের দেয়ালের চারদিকে একসারি টাইলস লাগানো হয়েছে, যাতে খণ্ড খণ্ড করে পুরো পবিত্র কোরআন লিপিবদ্ধ।

প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মাণাধীন এই মসজিদটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও এতে সহস্রাধিক বৈদ্যুতিক পাখা যুক্ত করা হবে।মসজিদসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ৪৫১ ফুট উচ্চতার একটি বিশাল বড় মিনার তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৫৭ তলা উঁচু ভবনের সমান এই মিনারের ৫০ তলা পর্যন্ত থাকবে লিফট সুবিধা। নাম হবে রফিকুল ইসলাম টাওয়ার। নির্মাণ শেষ হলে দিল্লির ২৪০ ফুট উঁচু কুতুব মিনারকে পেছনে ফেলে দেবে রফিকুল টাওয়ার।

মসজিদের উত্তর দিকে অবস্থিত অজুখানা। বিশাল বড় অজুখানায় বসে অজু করার জন্য ছোট ছোট চেয়ারের মতো ১১৬টি আসন রয়েছে।

মসজিদের বাম পাশে মাজারের মতো একটি স্থাপনা রয়েছে। সেখানে একজনের কবর দেওয়ার মতো জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। এখানে সমাহিত হবেন এই মসজিদের নির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম।

মসজিদের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ একই। মানে ১৪৪ ফুট করে। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির ছাদের মূল গম্বুজের উচ্চতা ৮১ ফুট। এই গম্বুজের চারপাশ ঘিরে ১৭ ফুট উচ্চতার আরো ২০০ গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। মসজিদের চার কোনায় রয়েছে ১০১ ফুট উঁচু চারটি মিনার। এ ছাড়া ৮১ ফুট উচ্চতার আরো চারটি মিনার পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ ভ্রমণপিপাসু অসংখ্য মানুষ এটি দেখতে ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ছুটে আসেন এখানে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, নির্মাণ শেষ হলে গিনেস রেকর্ড বুকে স্থান করে নেবে ২০১ গম্বুজ মসজিদ।

সাভার থেকে ঘুরতে আসা শামীম হোসেন বলেন, অনেক ইচ্ছে ছিল মসজিদটি দেখব, তাই পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দেখতে এসেছি, দেখে অনেক ভালো লাগলা। আসলেই অনেক সুন্দর মসজিদটি।

রাজশাহী থেকে আসা গোলাম রাব্বানী নামে একজন জানান, অনলাইনে মসজিদটি যে রকম দেখছিলেন বাস্তবেও অনেক সুন্দর। আসলে এই দেশে এ রকম মসজিদ হবে চিন্তাও করতে পারেননি তিনি।

মসজিদ কমিটির তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক সম্পাদক রুবেল হোসেন বলেন, ‘মসজিদটি নিয়ে অনেক স্বপ্ন রফিকুল ইসলামের। উনি চান এই মসজিদটি সারাজীবন সবাই রক্ষণাবেক্ষণ করুক। তার ইচ্ছে অনুযায়ী আশা করছি মসজিদের কাজ শিগগিরই শেষ হবে।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ভোরের আকাশকে বলেন, ‘মসজিদের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। বিশ্বের সব মসজিদের চেয়ে এর কারুকাজ অন্যরকম। মসজিদের কাজ শেষ হলে কাবা শরীফের ইমাম ও আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে উদ্বোধন করা হবে।’

মন্তব্য

Beta version