পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার খানপুরের চাঞ্চল্যকার আবু মুছা খা নামে এক চরমপন্থী নেতা হত্যার ঘটনায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় ২০ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন। আবু মুছা উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের বাসিন্দা।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পাবনার সদর উপজেলার তারাবাড়িয়ার মোহাম্মদ আলী (৪০), আতাইকুলার গাঙ্গুহাট ক্লাব পাড়ার খোকন (৪২) এবং সাঁথিয়ার ভদ্রখোলার জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫)। সাজাপ্রাপ্ত সবাই পলাতক।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খান, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আলতাব, অ্যাডভোকেট আহাদ বাবু এবং অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৩ আগস্ট সকালে সাইকেল মেরামতের দোকানে কাজে যাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১০/১২ জন সন্ত্রাসী আবু মুছাকে হাটবাড়ীয়া-বোয়াইলমারীর ডাব বাগানের ভেতরে নিয়ে মাথা ও বুকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আবু মুছাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ ঘটনার নিহতের স্ত্রী মোছা. রহিমা খাতুন পাবনার সাঁথিয়া থানায় ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পরের বছরে ২০০৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ও পরিকল্পনাকারী তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকিদের খালাসের আদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক বলেন, ‘ভিকটিম ও আসামিরা সবাই চরমপন্থীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চাঁদার টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি হয়। এর জেরেই আবু মুছাকে হত্যা করা হয়। আসামি চরমপন্থী হওয়ায় সাক্ষী দিতে অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন, যার কারণে মামলার কাজ দীর্ঘায়িত হয়। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।’
মন্তব্য