-->
শিরোনাম
ঢাকা-বগুড়া ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়ক

ঈদযাত্রায় দুর্ভোগের শঙ্কা

সিরাজুল ইসলাম শিশির, সিরাজগঞ্জ
ঈদযাত্রায় দুর্ভোগের শঙ্কা
মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণসহ নির্মাণাধীন নলকা সেতুর কাজ চলছে

আসন্ন ঈদে ঢাকা-বগুড়া ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কে দীর্ঘ যানজটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের পাশাপাশি পুরোনো নলকা সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ। ফলে এখনই মহাসড়কটি সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঈদের আগ মুহূর্তে এর মাত্রা আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চার লেনে উন্নীতকরণ ও নলকা সেতুর কাজ ঈদের আগেই শেষ হবে। এছাড়া যানজট নিরসনে সড়কে নিয়োজিত থাকবে বিপুলসংখক পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার মহাসড়কে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ২২টি জেলার যানবাহন পারাপার হয়। তাই এ মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকে সবসময়ই বেশি। এ কারণে প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে এ সড়কে থাকে দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক লাখ মানুষ।

মহাসড়কে উন্নয়নে চলছে মহাযজ্ঞ

 

এ দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চার লেনের কাজ ও নলকা নতুন সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। মহাসড়কের এক লেন বন্ধ রেখে চলছে চার লেন উন্নীতকরণের কর্মযজ্ঞ। মহাসড়কের অনেক অংশে ভেঙে চারলেনের কাজ করা হচ্ছে। এতে বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা খুঁড়ে কাজ করায় যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট।

ঈদে এ মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকলে এবারো নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছানো কিংবা বাড়ি থেকে ফেরা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সাধারণ যাত্রী ও গাড়ির চালকরা। গত ১৫ মার্চ সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়ক স্থবির হয়ে যায়। দীর্ঘ এ যানজটের জন্য সংশ্লিষ্টরা সড়ক ও নলকা ব্রিজের সংস্কার কাজকে দায়ী করেন। তখন থেকে এ যানজন স্থায়ী হয়েছে। আর এ অবস্থা চোখ রাঙাচ্ছে ঈদযাত্রাকে।

আব্দুল মান্নান নামে এক বাসচালক বলেন, ‘ঈদের আগে যদি মহাসড়কের কাজ সঠিকভাবে শেষ না হয়, তাহলে ঘরমুখো মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হবে।’ আরেক বাসচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট না থাকলে বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর যেতে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু যদি একবার যানজট লেগে যায়, তাহলে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। মহাসড়কের যে অবস্থা দেখছি তাতে ঈদে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।’

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তালুকদার বলেন, ‘ভোগান্তি ও যানজট এড়াতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে।’

সড়ক সংস্কারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আখতারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এখলাস উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের আগে আমরা আশা করছি, নির্মানাধীন নলকা সেতুসহ বাকি কাজগুলো শেষ করে যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারব। ঘরমুখো মানুষ যেন ভোগান্তির শিকার না হয়, সে বিষয়টি আমরা খেয়াল রাখছি।’

 

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বলেন, ‘ঈদে মহাসড়কের যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক জেলা পুলিশের সদস্য নিয়োজিত থাকবে।’

সেতু কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ঈদুল ফিতরের আগের দিন ৩ হাজার ৭৬৬টি বড় বাস, ৫ হাজার ৩৫৫টি বড় ট্রাক, ৭০টি ছোট বাস, ৩ হাজার ৬৭৪টি ছোট ট্রাক, ৩ হাজার ২৭২টি মাঝারি ট্রাক, ১৩ হাজার ৫৬টি মোটরসাইকেল ও ২৩ হাজার ৪৮৪টি ব্যক্তিগত গাড়ি বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে। ওই গাড়ি থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের মোট রাজস্ব এসেছে ২ কোটি ৯৯ লাখ ১৮ হাজার ৪০ টাকা, যা সেতু নির্মাণের পর সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়। ২০২০ সালের ঈদুল আজহার আগে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ২৪৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছিল।

মন্তব্য

Beta version