-->
শিরোনাম

আলট্রাসনোগ্রাফিতে যমজ সন্তান, অস্ত্রোপচারে মিলল একটি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আলট্রাসনোগ্রাফিতে যমজ সন্তান, অস্ত্রোপচারে মিলল একটি
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল

আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে মেলে যমজ বাচ্চার সংকেত। একবার নয়, পরপর তিনবার আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে গর্ভে জমজ বাচ্চা থাকার তথ্য জানানো হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর মেলে একটি ছেলে সন্তান। তাহলে কী আরেকটি বাচ্চা চুরি গেল? নাকি ভুল ছিল আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট?

এখন এ প্রশ্নে তোলপাড় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকা।

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে- যমজ নয়, গর্ভে একটি সন্তানই ছিল।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের রাসেল আলীর স্ত্রী রজনী খাতুন। গত রোববার (১৭ এপ্রিল) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু এতে অবাক রজনী খাতুনের পরিবারের স্বজনরা। কেননা, জমজ বাচ্চার জন্ম হওয়ার কথা। সেখানে একটি কেন?

গত ৯ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মা নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আলট্রাসনোগ্রাফি করেন রজনী খাতুন। সেখানে থাকা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) নাজমুল স্বাক্ষরিত প্রিন্ট রিপোর্টে জানানো হয় রজনী খাতুনের গর্ভে দুটি সন্তান রয়েছে। গত ৩১ মার্চ আবারো ওই প্রতিষ্ঠান থেকে আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। সেদিন ডা. আফরোজ শারমি একই রিপোর্ট দেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট ভুল ছিল। দুটি নয়, প্রসূতির গর্ভে বাচ্চা পাওয়া গেছে একটি। হাসপাতালের রিপোর্টে গর্ভে একটি বাচ্চার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল এবং সম্ভাব্য আরেকটি বাচ্চা থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছিল।

রজনী খাতুনের বাবা নবীর হোসেন বলেন, ‘প্রসব বেদনা উঠলে শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকালের দিকে আমার মেয়েকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। রজনীর গর্ভে দুটি সন্তান থাকলেও চিকিৎসক একটি সন্তান আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাহলে আরেকটি সন্তান কী হল? নিশ্চয়ই চুরি হয়ে গেছে। চুরি যাওয়া বাচ্চা আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

রজনী খাতুনের স্বামী রাসেল জানান, দুই প্রতিষ্ঠানে তিনবার আলট্রাসনোগ্রাফি করে একই রিপোর্ট এসেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভুল হলেও সদর হাসপাতালের রিপোর্ট কীভাবে ভুল হয়?

মা নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফি করা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা আলট্রাসনোগ্রাফি করি। আমাদের বৈধতা আছে। মানুষ মাত্রই ভুল করে। এ জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। ওই রোগীর রিপোর্ট প্রিন্ট করতে গিয়ে ভুল হতে পারে। এছাড়া আমারও ভুল হতে পারে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আকলিমা খাতুন বলেন, ‘সিজারের পর রজনী খাতুনের গর্ভে একটি ছেলে সন্তান পেয়েছি আমরা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সরাসরি বলা হয়েছে দুটি সন্তানের কথা। আর সদর হাসপাতালের রিপোর্টে একটি বাচ্চার কথা সরাসরি বললেও সম্ভাব্য আরেকটির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, ‘সদর হাসপাতালে যে চিকিৎসক আলট্রাসনোগ্রাফি করেছেন তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি রিপোর্টে একটি বাচ্চার কথাই উল্লেখ করেছেন। আর সম্ভাব্য আরেকটি বাচ্চা থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, ‘বিষয়টির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) কখনোই আলট্রাসনোগ্রাফি করতে পারবেন না। যদি করে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

মন্তব্য

Beta version