সুগন্ধি ধানের রাজ্য হিসেবে খ্যাতি রয়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে এই জেলায় এ বছর প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু জাতের ধানের। জানা যায়, এই জাতের ধানটি উদ্ভাবন করেছে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।
দিনাজপুর বিরল উপজেলার মতিউর রহমান নামে এক কৃষক প্রায় ৫০ একর জমিতে এই জাতের ধান চাষ করেছেন। প্রথমবার এই ধানের চাষ করে তিনি সাফল্য দেখেছেন।
৫০ একর জমিতে আবাদি ধান আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই কাটা-মাড়াই করে ঘরে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষক মতিউর রহমান। আর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই কৃষকের উৎপাদিত ধান বীজ হিসেবে নিয়ে দ্রুত সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)।
কৃষক মতিউর রহমানের বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বড়বৈদ্যনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার আবাদি জমিতে গিয়ে দেখা যায়, ধানগাছগুলো বাতাসে দুলছে। সোনালি শীষগুলো যেন উঁকি মারছে অপরাপর।
সাফল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি এই ধান চাষ করে ব্যাপক সাফল্যতা দেখতে পাচ্ছি। উৎপাদনও ভালো, খরচ মোটামুটি কম। অন্য ধানে যেখানে পাঁচবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় সেখানে এই ধানে তিনবার কীটনাশক প্রয়োগ করলেই হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘অন্যান্য জাতের তুলনায় সার প্রয়োগের মাত্রাও কম। অন্যান্য ধানের তুলনায় দু-এক সপ্তাহ আগেই ধান ঘরে তুলতে পারায় ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে ফসল নষ্টের সম্ভাবনা কম রয়েছে এই জাতের ধানের। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যেই রোপনকৃত ধান কাটতে শুরু করবো।’
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) দিনাজপুর কন্ট্রাক গ্রোয়ার্সের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু (ব্রি ধান ১০০) এর ফ্লাগ লিড ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়। অন্যান্য ধানে ফ্লাগ লিড কম থাকায় চিটা বেশি হয়। ১৪৫ থেকে ১৪৮ দিনের মধ্যে এই ধানে হেক্টর প্রতি ৭.৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন সম্ভব। অন্যান্য ধানে যা প্রায় ১৬০ দিন লাগে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ধান গবেষণা কেন্দ্র ফেনী থেকে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু (ব্রি ধান ১০০) জাতের ৫০০ কেজি ধান বীজ সংগ্রহ করে দিনাজপুরের মধ্যে বৃহৎ পরিসরে ৫০ একর জমিতে বিরলের কৃষক মতিউর রহমান চাষাবাদ শুরু করছেন। বিএডিসি’র কর্মকর্তারা এবং নিজেই মাঠ পর্যায়ে ধানক্ষেত পরিচর্যায় সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি।’ কৃষক মতিউর রহমান আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।
মন্তব্য