নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও জোর করে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে দেড় বছর গণধর্ষণ করেছে কাজল গাজীসহ তার সহযোগীরা। টানা দেড় বছর ধর্ষণের পর কিশোরীর গর্ভে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কন্যার পিতৃ পরিচয় না পেয়ে কিশোরী বাদী হয়ে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করে।
বুধবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে গোলাকান্দাইল ৫ নং ক্যানাল এলাকা থেকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি কাজল গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত কাজল গাজী উপজেলার গোলাকান্দাইল ৫ নং ক্যানালপাড় মৃত নাসির গাজীর ছেলে। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে কাজল গাজী, ইমন আকন (২৫), জালাল উদ্দিন, রনি ওরফে সিএনজি চালক রনি, লিয়াকত আলী, সুজন মিলে ওই কিশোরীকে রুমা বেগম নামে এক নারীর ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। এরপর থেকেই কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেড় বছর ধরে ধর্ষণ করে কাজল গাজী ও তার সহযোগীরা। পরে ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর ওই কিশোরী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।
সন্তান জন্মের পর ওই কিশোরীসহ তার পরিবারের লোকজনকে এলাকায় বসবাস করা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। মামলার আসামিরা বেশ কয়েকবার সন্তানটিকে হত্যার চেষ্টা চালায়। কাজল গাজীসহ যাদের মাধ্যমে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে তাদের সবাইকে সন্তানের পিতৃ পরিচয় দেওয়ার কথা বলে ওই কিশোরী। কিন্তু তারা উল্টো ওই কিশোরীকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়।
পরে ওই কিশোরী কোনো উপায় না পেয়ে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে। এরপর থেকেই কাজল গাজীসহ তার সহযোগীরা পলাতক ছিল। বুধবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কাজল গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কাজল গাজীর যন্ত্রণায় গোলাকান্দাইল ৫ নং ক্যানালের মানুষ অতিষ্ঠ। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ জানান, গণধর্ষণ মামলার আসামি কাজল গাজীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য