রমজান মাস শেষ হতে চলছে। কয়েকদিন পরেই ঈদ। প্রতিবছর প্রথম রোজা থেকেই থান কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় থাকে। তবে এ বছর ১৯ রোজার পরও থান কাপড়ের দোকানগুলোতে শুনশান নীরবতা। ক্রেতাদের সন্তোষজনক আগমন না থাকায় হতাশায় আছেন থান কাপড়ের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন থান কাপড়ের দোকান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ফুটে ওঠে এমন চিত্র।জানা গেছে, গত দুই বছরের করোনার কারণে ব্যবসা করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।
ফলে লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের। লোকসান পোষাতে এ বছর ঈদকে সামনে রেখে অন্যান্যবারের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি মাল তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে থান কাপড়ের ব্যবসায়ীরা রমজানের আগেই বেশি করে কাপড় কিনেছেন। কিন্তু আগের তুলনায় এবার বাজারে ক্রেতা কম।
ব্যবসায়ীরা জানান, অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় থান কাপড় আগে ভাগে বিক্রি হয়। আর তা না হলে পরবর্তীতে থান কাপড় বিক্রি করা কষ্টকর। প্রথম রমজান থেকে ২০ রমজানের এই সময় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও প্রত্যাশিত বিক্রি হচ্ছে না।
শহরের মধ্যে থান কাপড়সহ অন্যান্য কাপড়ের ছোট ও মাঝারি তিনটি দোকান রয়েছে রিপন দের। গত দু’বছর করোনার কারণে ব্যবসা হয়নি তার। তাই তো চলতি বছর চারগুণ বেশি মাল তুলেছেন তিনি।
রিপন দে বলেন, ‘প্রত্যাশা অনুযায়ী ক্রেতা পাচ্ছি না। আর ২-৩ দিন থান কাপড় বিক্রি করা যাবে। সব মিলিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।’
ব্যবসায়ী কাবের আহমেদ বলেন, ‘দোকানে থান কাপড়সহ অন্যান্য পোশাক বিক্রি করি। এখন পর্যন্ত ব্যবসা কম হলেও আশাবাদী সব মিলিয়ে পুষে যাবে।’
গত কয়েক বছরের মধ্যে চলতি বছর থান কাপড়ের বিক্রি অনেক কম বলে জানান ব্যবসায়ী অনিমেষ দেব। তিনি বলেন, ‘বেশি বিক্রি ও লাভের আশায় অধিক টাকা বিনিয়োগ করলাম। কিন্তু বিক্রি কম। যে কয়দিন আছে দেখি কতটুকু বিক্রি করতে পারি।’
কথা হয় কাপড় সেলাইয়ের দোকান মালিক হাসান আহমদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় কাপড় সেলাইয়ের অর্ডার কম পাচ্ছি। ভেবেছিলাম যেহেতু করোনা নেই, তাই রোজগার ভালো হবে। তবে আশানুরূপ হচ্ছে না।’
কাপড় কিনতে আসা সুমাইয়া আফরিন বলেন, ‘টুকটাক থান কাপড় কিনেছি।’
ক্রেতা পাপড়ি খানম বলেন, ‘বেশিরভাগই কেনা শেষ। বাকিগুলো দুই একদিনের মধ্যে কিনে ফেলব। আগে আগে কিনতে হবে, না হলে টেইলার্স সময়মতো সেলাই করে দিবে না।’
মৌলভীবাজার বিজনেস ফোরামের নেতা শাহাদাৎ হোসাইন বলেন, ‘ব্যবসা যত কম হবে, ব্যবসায়ীরা তত ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এখন পর্যন্ত ভালো না গেলেও আমরা আশাবাদী ঈদ পর্যন্ত কেনাবেচা ভালো হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অধিক দামের ফলে বেশিরভাগ মানুষ অর্থসংকটে রয়েছেন। এর প্রভাব ঈদ বাজারে পড়বে।’
মন্তব্য