বকেয়া বেতনভাতা প্রদান ও শ্রমিকদের স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদান করানোর দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকরা। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
রোববার বেলা ১১টার দিকে কয়লাখনির প্রধান গেট থেকে শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি খনি এলাকা প্রদক্ষিণ করে গেট সংলগ্ন এলাকায় সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিক নেতা এহসানুল হক সোহাগ, এরশাদ আলী ও আবু তাহের প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খনির সূচনালগ্ন থেকেই আন্দোলনকারী শ্রমিকরা ভূগর্ভের নিচে প্রায় ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কয়লা উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সচল রেখেছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ওই সময় শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন।
পরবর্তীতে লকডাউন উঠে গেলেও বাড়িতে অবস্থানকারী শ্রমিকদের কর্মে ফেরানো এবং বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতনভাতা প্রদানসহ স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদানের ব্যবস্থা করা না হলে দাবি পূরণে পরিবার পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেন তারা।
সমাবেশ শেষে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে খনি গেটে অবস্থানরত নিরাপত্তা সুপারভাইজারের মাধ্যমে দুই দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে দেওয়া হয়।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খন বলেন, ‘চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে অধীনে কর্মরত প্রায় এক হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এরমধ্যে করোনায় ৪৫০ থেকে ৫০০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ওই সময় যেসব শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছিল তারাও এখন বেতনভাতা দাবি করছে। কিন্তু চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ কাজে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো বা তাদেরকে আবারো কাজে নিতে পারে। তবে খনি কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে ওইসব শ্রমিকদের বিসিএমসিএল’র পক্ষ থেকে এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন ঈদে আবারো তাদেরকে অর্থ সহায়তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত এখনও পাওয়া যায়নি।’
মন্তব্য