দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। স্বাভাবিক সময়ে এই সড়কে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম থাকলেও ঈদ আসলে এই চাপ বাড়ে কয়েক গুণ।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি দূর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও এই মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে তীব্র যানজট ও ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ার বারোবাড়িয়া থেকে শিবালয়ের পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত মোট ৩৭ কিলোমিটারজুড়ে ১০টি স্পটে রাস্তার চার লেনের উন্নয়ন কাজ চলছে। বেশ কয়েকটি স্পটে কিছু অংশের কাজ শেষ হলেও অধিকাংশ জায়গায় তা চলমান।
উন্নয়ন কাজের জন্য ওই এলাকায় সড়কের একাংশ বন্ধ রাখায় মহাসড়কে এখনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঈদের আগে যদি এ সমস্যার সমাধান না করা হয় তাহলে দুর্ভোগে পড়বে যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।
সেলফি পরিবহণের চালক রমজান আলী জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশের গোলড়া, উথলী, বানিয়াজুরীসহ বেশ কয়েকটা এলাকায় রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। ঈদের আর বাকি ৮-৯ দিন। এর মধ্যে যদি রাস্তাগুলো ঠিক করা না হয় তাহলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে সবার।
উনিশে পরিবহণের চালক জানান, মহাসড়কে এখনো সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি চলাচল করছে। ঈদের আগে যদি এসব তিন চাকার যানবাহন বন্ধ করা না হয় তাহলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে।
মনিরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী জানান, এখনো তো ঈদের জন্য মানুষ গন্তব্যে যাওয়া-আসা শুরু করেনি। এখনই তো মানিকগঞ্জ আসতেই আড়াই ঘণ্টা লেগে গেল। আরো এক দেড় ঘণ্টা লাগবে পাটুরিয়া পৌঁছাতে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় এখনো অনেক কাজ বাকি। ঈদের আগে শেষ না হলে এবার সবাইকে ভুগতে হবে।
মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস-উল-হাসান মারুফ বলেন, ‘মানিকগঞ্জ অংশের কয়েকটি স্পটে যে কাজ বাকি আছে তা আগামী ২৫ তারিখের মধ্যেই শেষ করা হবে। আর কাজ শেষ হয়ে গেলে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি গিয়ে ঈদ করতে পারবেন।’
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘ঈদে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে বাড়তি চাপ সামাল দিতে নতুন পাঁচটি ফেরিসহ মোট ২১টি ফেরি ও ৩৩টি লঞ্চ দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হবে। এই নৌপথে পারাপার স্বাভাবিক রাখতে প্রায় সব প্রস্তুতিই শেষ করেছি আমরা।যদি যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় তাহলে আরো ফেরি এ ঘাটে নিয়ে আসব।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু ঈদের ৪-৫ দিন আগে থেকেই সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে তাই আশা করি আমাদের বহরের সব ফেরি যদি ঠিকমতো চলে তাহলে ঘাট এলাকায় তেমন সমস্যা হবে না।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে ঘাট এলাকায় মানুষের নিরাপত্তার জন্য আট শতাধিক পুলিশ অফিসার ও সদস্যরা কাজ করবে। ঘাটে চাঁদাবাজ, দালাল, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টিদের জন্য আলাদা একটি টিম কাজ করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঈদের চারদিন আগে থেকেই সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। ঘাট এলাকায় চাপ কমানোর জন্য ছোট-বড় গাড়ির জন্য আলাদা আলাদা লেন করা হয়েছে। মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারে তার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ।’
মন্তব্য