অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও ফেরি সংকটের কারণে দৌলতদিয়ায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঈদের আগে এমন যানজটের আতঙ্কে রয়েছেন এই রুটের চালক ও যাত্রীরা। যদিও বিআইডব্লিউটিসি বলছে, ফেরির সংকট নেই, পণ্যবাহী ট্রাকের চাপেই যানজট পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে দুই লাইনে ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ছয় কিলোমিটার এলাকায় যাত্রীবাহী পরিবহণ ও পণ্যবাহী ট্রাকের সারির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিটি যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে উঠতে হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চালক ও যাত্রীরা।
এদিকে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি কমাতে দুটি ফেরি যোগ করার কথা থাকলেও এখনো তা আসেনি। সেই সঙ্গে নতুন একটি ঘাট স্থাপন করলেও সেখানে কোনো ফেরি ভিড়তে দেখা যায়নি।
গোল্ডেন লাইনের যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৬টায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে আটকা পরি। একটু একটু করে এগোতে এগোতে সাড়ে ১১টার সময় ঘাট থেকে দুই কিলোমিটার দূরে এসেছি। এখান থেকে ফেরিতে উঠতে আরও দুই ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হবে।’
আরেক যাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘৬টা থেকে বসে আছি। প্রচণ্ড রোদ আর গরমে বসে থেকে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বাচ্চাটা গরমে ছটফট করছে। সেই সঙ্গে ঘাট এলাকায় নেই পর্যাপ্ত শৌচাগার ব্যবস্থা।’
সাতক্ষীরা থেকে আসা ট্রাকচালক মহিউদ্দিন বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় ঘাটে এসেছি। এখন সোমবার দুপুর ১২টা। এখনো ফেরিতে উঠতে পারিনি। খুবই কষ্ট হচ্ছে। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। কখন ফেরিতে উঠতে পারব সেটা জানি না।’
জানা যায়, দৌলতদিয়া প্রান্তে মোট সাতটি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ১ ও ২নং ফেরিঘাটটি ২০১৯ সালের বর্ষায় নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ঈদ উপলক্ষে ২নং ফেরিঘাটটি সচল করায় বর্তমানে পাঁচটি ঘাট চালু রয়েছে। আর ৬নং ফেরিঘাটটি বর্ষার মৌসুম ছাড়া সচল থাকে না।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, ‘ঈদের তিন দিন আগে ও পরে এবং ঈদের দিন পণ্যবাহী ট্রাক পারপার বন্ধ রাখা হবেÑ সেজন্য পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ রয়েছে। যে কারণে ঘাট এলাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
এই রুটে ছোট-বড় মিলে ১৯টি ফেরির মধ্যে ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তিনটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটি থাকার কারণে ভাসমান করাখানায় মেরামতে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ হলেই চাপ কমে আসবে। এই মুহূর্তে ফেরির কোনো সংকট নেই।
মন্তব্য