-->
শিরোনাম

কলেজছাত্রকে মাথা ন্যাড়া ও নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
কলেজছাত্রকে মাথা ন্যাড়া ও নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

প্রেম সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রকে অপরহণ করে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। রোববার বিকেলে সাতক্ষীরার তালা সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসে এঘ টনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার তালা থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র শোয়েব আজিজ তন্ময় (২০) তালা সদরের জাতপুর গ্রামের শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে। তিনি চলতি বছর জাতপুর টেকনিক্যাল কলেজ থেকে এইচএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য খুলনায় কোচিং করছেন তন্ময়।

তন্ময়কে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় পাঁচ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন তালার মাঝিয়াড়া গ্রামের সৈয়দ ইদ্রিসের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আকিব (২৫), হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের গণেশ চক্রবর্তীর ছেলে উপজেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র চক্রবর্তী (৩২), তালা গার্লস স্কুলের পেছনের বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী জে.আর সুমন (২৫), তালার মহান্দি গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী জয় (২৪) ও তালা সদরের নজির শেখের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ হাসান উৎস (২৪)।

তন্ময়ের বাবা আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে ওদের কোনো বিরোধ নেই। একসঙ্গে পড়েও না।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোববার দুপুর একটার দিকে আমার ছেলের পূর্ব পরিচিত নাহিদ হাসান উৎস নামের একটি ছেলে মোবাইল ফোনে তন্ময়কে কলেজের সামনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তন্ময়কে ধরে নিয়ে যায় কলেজের মধ্যে একটি রুমে। সেখানে নিয়ে মারধর, মাথা ন্যাড়া ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। তারপর আমার স্ত্রীর কাছে ফোন করে ছেলেকে নির্যাতনের চিৎকার শোনাচ্ছিল তারা। পরে আমার ভাইপোরা যেয়ে তাকে উদ্ধার করে।’

তালা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ হুমায়ূন কবীর জানান, এ ধরনের কোনো খবর তার জানা নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ছাত্রলীগের নেতা আকিবের সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি আকিবের সঙ্গে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। নতুন করে সম্পর্ক গড়ে উঠে তন্ময়ের সঙ্গে। তন্ময়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে আকিব তাকে নাহিদের মাধ্যমে ডেকে এনে নির্যাতন চালায়।

ঘটনার মূল অভিযুক্ত আকিবের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রলীগকর্মী জয় বলেন, ‘তন্ময়কে ডেকে এনে মারপিটের কিছু ঘটনা ঘটেছে। পরে এ ঘটনা মিটমাটও হয়েছে। তবুও তন্ময়রা মামলার মধ্যে কেন গেল, বুঝতে পারছি না।’

সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন বলেন, ‘সাধারণ ছাত্র বা মানুষের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের এমন আচরণ হয়ে থাকলে তদন্ত করে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জেহাদ আলম ফকরুল খান বলেন, ‘এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা পাঁচজনকে জ্ঞাত ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই চন্দন কুমারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

Beta version