-->
শিরোনাম

একটি খাল ও ২০ হাজার কৃষক পরিবারের ভাগ্য

মাদারীপুর প্রতিনিধি
একটি খাল ও ২০ হাজার কৃষক পরিবারের ভাগ্য
লক্ষ্মীপুর-দোদারা খাল

শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট আর বর্ষায় থাকত জলাবদ্ধতা। এ জন্য প্রতিবছর অনাবাদি থাকত মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মালিকুঁড়ি বিলের প্রায় ৪ হাজার একর ফসলি জমি।

এ সমস্যা থেকে ফসলি জমি বাঁচাতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার দোদরা খাল পুনঃখনন করেন। ফলে বিলের পাড়ের ২০ হাজার কৃষক পরিবারের ভাগ্য বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে কৃষকেরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মালিকুঁড়ি বিলের ৯টি মৌজার প্রায় চার হাজার একর জমির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম লক্ষ্মীপুর-দোদারা খাল। বিগত ৩০ বছরেও খনন করা হয়নি প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ খালটি। এতে সামান্য বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে তলিয়ে যেত কৃষকের ফসল। তাদের কাছে অভিশপ্ত হয়ে ওঠে দোদারা খাল।

কৃষকদের কথা বিবেচনা ও বৃহত্তর এই বিলের ফসল রক্ষার্থে বিএডিসি বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের (৪র্থ পর্যায়) আওতায় লক্ষ্মীপুর-দোদারা খালটি পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ইতোমধ্যে খালটির শতভাগ পুনঃখননের কাজ শেষ হয়েছে। এতেই বদলে যেতে শুরু করেছে বিলপাড়ের প্রায় ২০ হাজার কৃষক পরিবারের ভাগ্য। এক সময়ের অভিশপ্ত খালটি এখন কৃষকদের কাছে আশীর্বাদ হিসেবে পরিণত হয়েছে। খালটি পুনঃখনন করায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি।

স্থানীয় কৃষক মোকারম বলেন, ‘এতদিন আমাদের এলাকায় পানির জন্য ফসল ভালো হতো না। এখন আমরা সব সময় পানি পাব আমাদের ফসল ভালো হবে। তাই সরকারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’

মিন্টু শেখ নামে আরো একজন বলেন, ‘আমাদের এখানে জমিতে অনেক সময় পানির অভাবে ফসল হয়নি। আমার এই এলাকায় অনেক জমি আছে। তেমন ফসল পেতাম না। তাই ভেবেছিলাম জমি বিক্রি করে দিব। কিন্তু এখন আর করব না। এখন আল্লাহর রহমতে ভালো ফসল হবে।’

রাজৈর উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী, বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘খালটি পুনঃখনন করায় কৃষকেরা রবিশস্যের পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারবেন। এ ছাড়া আগে যেখানে এই বিলে একটি ফসল তোলা সম্ভব হতো না, সেখানে কৃষকেরা এখন তিনটি ফসল উৎপাদন করতে পারবেন।

মাদারীপুর জোন সহকারী প্রকৌশলী, বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, খালটি পুনঃখননে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও বন্যায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দূরীকরণের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কৃষকের ফসল রক্ষা পাবে। এ ছাড়া খালে ধারণকৃত পানি শুকনো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব ও প্রায় ৪ হাজার একর জমি তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর হবে।

মন্তব্য

Beta version