প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না সুনামগঞ্জের। পাহাড়ি ঢলে একের পর এক বোরো ফসলের ক্ষয়ক্ষতি অন্যদিকে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে আতঙ্কিত জেলাটির সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে জেলার সদর উপজেলা, শান্তিগঞ্জ, দিরাই, জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, জগন্নাথপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে কালবৈশাখী ঝড় হয়। এতে কাচা-আধাপাকা টিনসেটের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গাছপালা বিধ্বস্ত ও বিদ্যুতের লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে আতঙ্কিত হয়ে ইতোমধ্যে দুজন মারা গেছে।
নিহতরা হলেন- দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের আব্দুল ওয়াহাব (৬০) নামে এক বৃদ্ধা ও জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়ন সন্তোষপুর গ্রামের হুশিয়ার আলীর স্ত্রী আজিজুন নেছা।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে প্রবল বেগে জেলার সদর উপজেলা, শান্তিগঞ্জ, দিরাই, জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার,তাহিরপুর, জগন্নাথপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এসব উপজেলায় সহ্রাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুতের লাইন।
বুধবার সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ও গাছপালার লণ্ডভণ্ড চিত্র দেখা যায়।
শান্তিগঞ্জের ইনাতনগর গ্রামের দিনমুজর আছিয়া বেগম বলেন, ‘আমি অসহায় মানুষ। গত রাতে আমার শেষ সম্ভল আশ্রয়ের ঘরটুকু তোফানে ফালাই দিছে। রাতে ঘরের নিচে ছিলাম । তুফান এসে হঠাৎ ঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় যাবো।’
ইকবাল নামে আরেকজন বলেন, ‘ঝড়ে আমার ভাইয়ের ঘর ও আমার ব্যবসার ফার্মেসির দোকান উড়িয়ে নিয়ে গেছে। আমার অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এলাকার ২৫-৩০টি ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।’
নিহতের বিষয়ে দিরাই থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, ‘মাঝরাতে ঝড়ে ওয়াহাব মিয়ার ঘরে চাল উড়ে যায়। সেটি দেখে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ঘর-বাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
মন্তব্য