-->
শিরোনাম

টাকা ছাড়া মিলছে না কার্ড

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
টাকা ছাড়া মিলছে না কার্ড
শিবগঞ্জের ধাইনগর ইউনিয়নের বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের মাঝে ভাতা বই বিতরণের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফটিক ও আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নে বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের মাঝে ভাতাবই বিতরণের নামে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফটিক ও আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রায় ২০ জন ভুক্তভোগী।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় গত রোববার ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতাবই বিতরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ।

এ সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ফটিক আলী ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুল মালেক প্রায় দেড় শতাধিক সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ৫০০-১৫০০ টাকা করে আদায় করেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন সুবিধাভোগী অর্থ দিলেও মেলেনি তাদের ভাতাবই।

সেরিনা নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য ফটিক আলী আমাকে বিধবা ভাতার বই দেওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়েছিলেন। পরে গত চার দিন আগে আমি জানতে পারি আমার বিধবা ভাতা বইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু আমি সেই বিধবা ভাতার কার্ড আনতে গেলে জানায়- টাকা ছাড়া কার্ড দিবে না ফটিক আলী। পরে এক হাজার টাকা দিয়ে কার্ড নিয়ে এসেছি।’

জাবেদা বেগম নামে এক স্বামী পরিত্যক্তা নারী বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট মেম্বার ফটিক আমার কাছ থেকে বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছেন। আমি হাওলাত করে তাকে টাকা দিয়েছি। সরকার এই টাকা নেয় না। আমি ফটিকের বিচার চাই।’

নাজরিন-রজিনা ও হালিমা নামে তিন নারী বলেন, ‘গত এক মাস আগে বিধবা-বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়ার জন্য আমাদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়েছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আবদুল মালেক। গত কয়েকদিন আগে আমাদের কার্ড হয়ে গেছে বলে জানান। তবে এক হাজার টাকা ছাড়া কার্ড দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরে টাকা দিয়ে আমরা কার্ড নিয়ে এসেছি।’ তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য ফটিক আলী ও আবদুল মালেক। তারা দাবি করেন, এসব মিথ্যা কথা। আর এ বিষয়ে ধাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মণ্ডল বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নিয়মবহির্ভূত কাজ করেছেন। তার নির্দেশে সমাজসেবা কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে ভাতাভোগীদের কাছ হতে এক হাজার থেকে দেড় হাজার পর্যন্ত টাকা আদায় করা হয়েছে। এতে বর্তমান সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস জানান, ইউপি সদস্য ফটিক আলী ও আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।

মন্তব্য

Beta version