-->
শিরোনাম

মনপুরায় সি-ট্রাক চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে যাত্রীরা

মোকাম্মেল মিশু, ভোলা
মনপুরায় সি-ট্রাক চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে যাত্রীরা

ভোলা-মনপুরা রুটে সি-ট্রাক সার্ভিস চালু না থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। ১৫ মার্চ থেকে মেঘনা মোহনার এই রুটটি ডেঞ্জার জোন হিসেবে ঘোষিত হওয়ায় সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের অনুমোদনবিহীন লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

এ অবস্থায় ছোট ছোট নৌযানে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে যাত্রীরা। দ্রুত এ রুটে সি-ট্রাক চালুর দাবি করছেন তারা। শীঘ্রই সি-ট্রাক চালু হচ্ছে বলে আশ্বাস বিআইডব্লিউটিসি’র।

দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন পর্যটন দ্বীপ মনপুরায় নৌ-পথ ছাড়া যাতায়াতের অন্য কোনো মাধ্যম নেই । সাধারণত এখানকার মানুষেরা ঢাকা-হাতিয়া রুটের লঞ্চে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু মাঝপথে উঠতে-নামতে গিয়ে তাদেরকে নানা ঝক্কি-ঝামেলা আর বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।

জেলা শহর ভোলা কিংবা অন্যান্য উপজেলা থেকে মনপুরা যাতায়াতের সহজ মাধ্যম হচ্ছে তজুমুদ্দিন থেকে সি-ট্রাক। শীতে নদীতে পানি কম থাকায় সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকে।

১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত মেঘনা মোহনার এই রুটটি উত্তাল থাকায় সরকার এই এলাকাটিকে ডেঞ্জার জোন হিসেবে ঘোষণা করে। এ সময়ে এ রুটে ছোট ছোট নৌযান তো দূরের কথা সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের ফিটনেস সার্টিফিকেটবিহীন লঞ্চ চলাচলও নিষিদ্ধ থাকে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিবছর এ সময়ে এ রুটে সরকার সি-ট্রাকের ব্যবস্থা করে। অথচ এবছর ডেঞ্জার জোন ঘোষণার ১ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এ রুটে সি-ট্রাক সার্ভিস চালু হয়নি।

সি-ট্রাক চালু না হওয়ায় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ছোট ছোট নৌযানে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিশাল উত্তাল মেঘনা মোহনা পাড়ি দিয়ে ভোলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মনপুরা যাতায়াত করছে।

এসব ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলারে বসার ব্যবস্থা থাকে না, থাকে না টয়লেট কিংবা মাথার ওপর শীতল ছায়া। যেকোনো সময় ঢেউয়ের তোড়ে নদীতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য এ রুটে স্থায়ীভাবে সি-ট্রাক চালুর দাবি ভুক্তভোগী যাত্রীদের ।

যাত্রী মো. ইমতিয়াজ জানান, তজুমুদ্দিন ও মনপুরার মাঝখানে যে মেঘনা নদী এটা কয়েকটা বড় নদীর মধ্যে একটি। এ নদীটি বিপজ্জনক। ১৫ মার্চের পর থেকে এ নদীতে সি-ট্রাক দেওয়ার কথা, কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত কোনো সি-ট্রাক এখানে দেয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন তারা। যদি তাদের কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায় কে নেবে? এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

রহমান ফরাজি জানান, তিনি মনপুরাতে চাকরি করেন। প্রতিনিয়তই তাদের এই নদী পার হতে হয়। এখন বর্ষার সময় সি-ট্রাক না থাকায় এই নদী পার হওয়া তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যদি এখানে সি-ট্রাক চালু হতো তাহলে তারা নিরাপদে যাতায়াত করতেন।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেন সি-ট্রাক চালু হলো না, এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির ভোলার ব্যবস্থাপক পারভেজ খান বলেন, ‘সি-ট্রাক পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রধান কার্যালয় নিয়ে থাকে। প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন শিগগিরই মনপুরা-শশীগঞ্জ রুটে সি-ট্রাক পাঠানো হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসির কাছ থেকে ভাড়া এনে ইজারাদাররা সি-ট্রাক চালিয়ে থাকেন। বিআইডব্লিউটিসির প্রধান কার্যালয়ে ইজারাদার নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’

মনপুরার মতো ভোলার দৌলতখান, আলেকজান্ডার ও হাকিমুদ্দিন-লক্ষ্মীপুর রুটে সি-ট্রাক সার্ভিস এখনো চালু হয়নি। ঈদে যাত্রীদের চাপ বাড়ার আগে ভোলার সি-ট্রাক সার্ভিসগুলো সচল রাখার দাবি যাত্রীদের।

মন্তব্য

Beta version