সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সবাই। কিন্তু এরই মধ্যে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে অন্তত দুই শতাধিক পরিবারের কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত করে দিয়ে তাদের ঈদ আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে। ঝড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে ঈদ উদযাপনের পরিবর্তে অসহায় ওই পরিবারগুলো বর্তমানে চরম হতাশায় রয়েছেন।
শুক্রবার মধ্যরাতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামের মধ্যে ২০-২৫টি গ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে গ্রামগুলোর অন্তত দুই শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এছাড়া ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাওরের জমির বোরো ধান ও গাছপালারও। ভেঙে যায় বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি। এ অবস্থায় ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
শনিবার বিকেলে খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওবায়দুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান জানান, সামনে ঈদ। আর ঈদের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে কালবৈশাখী ঝড়ে তার ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামের মধ্যে বাউশা, মেদির কান্দা, গৌরীপুর, লক্ষীপুর, বামনগাঁও, গজার বাড়ি ও রানীগাঁওসহ অন্তত ২০-২৫টি গ্রামের দুই শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চরম বিপাকে পড়েছে। তাদের ঈদ আনন্দটাই ম্লান হয়ে গেছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শক করে অসহায় পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন জানিয়ে চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, ‘বাজারে ঢেউটিনের মূল্যও অনেক চড়া। তাই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষে তাদের ঘরবাড়ি মেরামত করাও অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার যদি সহায়তা না করেন তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোও কঠিন হয়ে পড়বে।’
শুধু ঘরবাড়িই নয়, ঝড়ে ওইসব এলাকার জমির বোরো ধান ও গাছপালারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী এ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে এলাকার বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। এ অবস্থায় এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে পল্লীবিদ্যুতের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মেরামত কাজ করছেন।’
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত রানীগাঁও গ্রামের রবিকুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে তাদের ঘরবাড়ি তো ভেঙেছেই- বোরো ধান মাটিতে লেপ্টে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং গাছপালাও ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাদের কপালে আর ঈদ আনন্দ করা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাশেম বলেন, ‘আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ঝড়ে ঘরবাড়িসহ বোরো ধান ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে ঈদের পর তাদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
মন্তব্য