-->
শিরোনাম

ঈদ আনন্দ নেই ভোলার জেলেদের

মোকাম্মেল মিশু, ভোলা
ঈদ আনন্দ নেই ভোলার জেলেদের

ভোলার পাঁচ লাখেরও বেশি জেলে এবার ঈদ উদযাপন করতে পারছে না। মাছ শিকারে দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারি প্রণোদনার চাল না পাওয়ায় ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত জেলে পরিবারের সদস্যরা। এজন্য স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও মৎস্য বিভাগকে দায়ী করছে জেলেরা।

মার্চ-এপ্রিল দু’মাস মাছ শিকারে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা উঠে যাওয়ার পর জেলেরা আশায় বুক বেঁধেছিল গত ২/৩ দিন মাছ ধরে অন্তত ঈদটা ভালোভাবে উদযাপন করতে পারবে। কিন্তু জেলেদের সে আশা পূরণ হলো না। কারণ নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ বিরতির পর নদীতে নেমে শূন্য হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাদের।

প্রচণ্ড গরমে নদীতে দেশীয় মাছের আকাল চলছে, ইলিশের মৌসুম আসতে এখনো দুই মাস বাকি। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরও জেলেরা তাদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনার চাল পায়নি। দুই মাস মাছ শিকার করতে না পেরে বেকার থাকায় জমানো টাকাও নেই তাদের হাতে। সব মিলিয়ে দৈন্যদশার কারণে এবারের ঈদ আনন্দ ফিকে হয়ে গেছে জেলেদের।

ভোলার জেলে জসিম ফারাজী জানান, দুই মাস নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে এখন কোনো মাছ নেই। নিষেধাজ্ঞার সময় এবং ঈদ উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাননি তারা। এজন্য ছেলে-মেয়ে, বাবা-মাকে ঈদে কোনো কিছুই কিনে দিতে পারেনি তিনি।

ইলিশা ঘাটের জেলে রহমান মাঝি জানান, তিনি আশা করেছিলেন নিষেধাজ্ঞার পরে নদীতে প্রচুর মাছ থাকবে, ভালোভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবে। কিন্তু নদীতে এখন মাছও নেই, তাদের ঈদ নেই। পায়নি সরকারের প্রণোদনার চাল বা কোনো সহায়তা।

স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং মৎস্য ও খাদ্য বিভাগের গাফিলতির কারণে জেলেরা তাদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনার চাল সময়মতো পাননি তারা।

তবে জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সব জেলের জন্য প্রণোদনার চাল বরাদ্দ হয়নি। যাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তার পরিমাণও একেবারেই কম। তারপরও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে জেলেদের ঈদ উদযাপনে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো বেশিসংখ্যক জেলেকে প্রণোদনার আওতায় আনার দাবিও জনপ্রতিনিধিদের।

ভোলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন বলেন, ‘তাহার ইউনিয়নটি নদীর কাছাকাছি হওয়াতে ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষই জেলে এবং মৎস্য ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। এখানে যারা জেলে রয়েছে অনেকেরই জেলে কার্ড নেই। আবার কার্ডধারী যে সমস্ত জেলায় রয়েছে তাদের সবার জন্য বরাদ্দ আসেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘জেলের জন্য যে বরাদ্দ এসেছে তা ইতোমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং তোফায়েল আহাম্মদের পক্ষ থেকে জেলেদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়েছে।’ ভবিষ্যতে যাতে আরো বেশি জেলেকে তালিকাভুক্ত করা যায় সেজন্য কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় ১ লাখ ৪৬ হাজার নিবন্ধিত জেলেসহ প্রায় পাঁচ লাখ জেলে শুধু মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

মন্তব্য

Beta version