কুড়িগ্রামে পেট্রোল পাম্পসহ বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে পেট্রোল ও অকটেন। গত দুই দিন ধরে সংকট দেখা দিলেও সোমবার সকাল থেকে সরবরাহ থাকায় সংকট কিছুটা নিরসন হয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে গ্রাহকদের মাঝে। তবে জেলা শহরে সরবরাহ ঠিক থাকলেও উপজেলা শহরগুলোতে এখনো বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে জ্বালানি তেল। সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকার অজুহাতে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা।
গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা শহরের ফিলিং স্টেশনগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, পাম্পগুলোতে বাঘাবাড়ী, রংপুর ও পার্বতীপুর ডিপো থেকে পেট্রোল ও অকটেন সরবরাহ এসেছে। তেল মজুত করার আগেই সেগুলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। চাহিদানুযায়ী তেল বেশি না পেলেও প্রত্যেক ফিলিং স্টেশনের মালিকরা গ্রাহকদের দেওয়ার মতো পেট্রোল, অকটেন পাচ্ছেন।
মেসার্স বি আর ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. আলী হোসেন আকিব বলেন, ‘সোমবার দুপুরে আমি পেট্রোল সাড়ে ১৩ হাজার লিটার ও অকটেন ৯ হাজার লিটার পেয়েছি। যা সকালে নামানোর সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে গেছে। আমার চাহিদানুযায়ী এটা পর্যাপ্ত নয়।’
মেসার্স এসএস ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, বাঘাবাড়ী ও রংপুর ডিপো থেকে ১৫ হাজার লিটার পেট্রোল ও অকটেন রোববার রাতে এসেছে। আমরা প্রত্যেক গ্রাহককে দুই থেকে তিন লিটারের বেশি দিচ্ছি না। এতে তেলের বাজারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে।’
মেসার্স সাহা ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী সমরজিৎ সাহা রিন্টু জানান, আদর্শ পৌরবাজার সংলগ্ন এলাকায় তাদের পাম্পে সাড়ে ১৪ হাজার লিটার পেট্রোল ও ১০ হাজার লিটার অকটেন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ট্যাংকার রয়েছে। এর মধ্যে পেট্রোল ছয় হাজার লিটার ও অকটেন পাঁচ হাজার লিটার রয়েছে। যা প্রত্যেক গ্রাহকদের কাছে অল্প অল্প করে বিক্রি করা হচ্ছে।’
পৌর শহরের ফজলুর হক ফারাজী নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ’রোববার অনেক পেট্রোল পাম্পে তেল ছিল না। শহরের ফিলিং স্টেশনগুলোতে আজ তেল পেয়েছি। কোনো সমস্যা হয়নি।’
অন্যদিকে, উপজেলা শহরগুলোতে খোলা বাজারে পেট্রোল পাওয়া গেলেও দাম বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। নাগেশ্বরী উপজেলার ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, ‘সকালে দুই লিটার পেট্রোল কিনেছি ১৯০ টাকা দিয়ে। তেল রোববারের চেয়ে আজ পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে দাম বেশি করে রাখছে।’
একই উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড় এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, রোববার সকালে বাজারে পেট্রোল কিনতে গিয়ে অবাক হই। এক লিটার পেট্রোল দোকানদার ১৫০ টাকা নিয়েছেন। সোমবার কিনলাম ৯৫ টাকা করে। অকটেন নিল ১০৫ টাকা করে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির আওতাধীন ২৩টি পেট্রোল পাম্প রয়েছে। এছাড়া ২০ জনের মতো এজেন্ট রয়েছে। এ কোম্পানিগুলোর বাঘাবাড়ী, পার্বতীপুর ও রংপুর ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। এখন প্রত্যেকটি পাম্পের পেট্রোল ও অকটেনের মজুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। জেলায় জ্বালানি তেলের আপাতত কোনো সংকট নেই।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য হাতে পেয়েছি তাতে চাহিদা অনুযায়ী পেট্রোল ও অকটেনের সরবরাহ কম থাকলেও জেলায় জ্বালানি তেলের কোনো সমস্যা নেই। আশা করি আগামী দুই থেকে তিন দিনে এটা আরো স্বাভাবিক হবে।’
মন্তব্য