-->
শিরোনাম

নারায়ণগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঈদগাহ দখলের অভিযোগ

সীমান্ত প্রধান, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঈদগাহ দখলের অভিযোগ
চেয়ারম্যান জাকির হোসেন

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেকে সরকারি জমিতে নির্মিত একটি ঈদগাহ দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি সেখানে মার্কেট ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, গত বছর ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আলীরটেক ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে “নৌকা’ প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলে আরও বেশি ভোট পেতেন” বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হন জাকির হোসেন। এই ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে কারণ দর্শাতে নোটিশ দিয়েছিল।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, চেয়ারম্যান তার লোকজনের সহায়তায় ইউনিয়নের ডিক্রীরচরে সরকারি জমিতে থাকা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ উচ্ছেদ করতে রাতের আঁধারে চারপাশে থাকা দেয়াল ও মিম্বর ভেঙে দিয়েছেন। সেখানে জাকির হোসেন তার অনুগতদের জন্য মার্কেট ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, দুই যুগ ধরে এই ঈদগাহে স্থানীয়রা ঈদের নামাজ আদায় করে আসছেন। ঈদগাহের উন্নয়নে সরকার থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদানও দেওয়া হয়। সেই অনুদানের টাকায় আগের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ঈদগাহের চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল ও একটি মিম্বর তৈরি করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সেই ঈদগাহ মাঠ দখল করে মার্কেট নির্মাণের পাঁয়তারা করছেন।

ইতোমধ্যে তার অফিসে বসে আলীরটেক ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতি আব্দুর রহমানকে দিয়ে দোকান বরাদ্দের একটি তালিকাও করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকেই তিনি ঈদগাহটি দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘এটা তো ঈদগাহ না। এটার ভেতর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাচ-গান, খেলাধুলা হয়। মাঝে মাঝে নামাজও হয়। আবার কিছু পণ্য এখানে এনে শুকানো হয়। আর এটা (ঈদগাহ) সরকার অনুমোদিত না, পঞ্চায়েতেরও না।’

তিনি আরো বলেন, ‘অতীতে শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে আসা একটা অনুদানের টাকায় এখানে চারপাশে দেয়াল হয়েছিল। সেটা স্কুলে না দিয়ে এখানে করছে। আমাদের ইউনিয়নে গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি। আমরা চাচ্ছি এখানে একটা মার্কেট ও কমিউনিটি সেন্টার করলে গ্রামের মানুষের আয়ের ব্যবস্থা হবে। কবরস্থানের পাশে নতুন একটা ঈদগাহ করা হয়েছে।’

তবে তিনি দাবি করেন, ‘ঈদগাহ উচ্ছেদ করে মার্কেট ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ তিনি নন, গ্রামবাসী নিয়েছেন।’

সদর উপজেলার ইউএনও রিফাত বিন ফেরদৌস বলেন, ‘সরকারি জমিতে থাকা ঈদগাহতে কেউ চাইলেই অপসারণ বা অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবেন না। এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন বা প্রকল্প থাকতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা আইন না জেনেই অনেক কিছু করার চেষ্টা করেন।’ এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য

Beta version