-->
শিরোনাম

২ টাকা কেজি দরেও মিলছে না ক্রেতা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

২ টাকা কেজি দরেও মিলছে না ক্রেতা

চলতি মৌসুমে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ব্যাপক হারে শসার চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। যেই শসা কিছুদিন আগেও পাইকাররা ক্ষেত থেকে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন এখন তারা দুই টাকা দরেও তা কিনতে রাজি হচ্ছেন না। এতে করে লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা।

কৃষকরা বলছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটই শসার দাম কমে গেছে। তাদের কারণেই বাইরের ব্যবসায়ীরা এখানে আসতে পারছেন না।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় ও মোকামে দাম না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিগত কয়েক বছর ধরে উপজেলার পৌর এলাকাসহ ৭টি ইউনিয়নেই প্রচুর শসার আবাদ হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় সরবরাহ করা হয় এখানকার শসা। স্থানীয় পাইকাররা কৃষকের ক্ষেত থেকে শসা কিনে বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। কিন্তু এ বছর দাম না পেয়ে লোকসানের শঙ্কা করছেন কৃষকরা।

গতকাল শুক্রবার সকালে ফুলবাড়ী পৌর বাজারের পাইকারি সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার উৎপাদিত শসা নিয়ে বাজারে বসে আছেন কৃষকরা। যে পরিমাণ শসা আমদানি হয়েছে, তার তুলনায় পাইকার ক্রেতা নেই বললেই চলে।

উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের কোয়ারপুর গ্রামের শসা চাষি রাম চন্দ্র রায়। চলতি মৌসুমে এক একর জমিতে শসার আবাদ করেছেন তিনি। খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। তিনি বলেন, ‘এখন যে দাম, তাতে শ্রমিকদের মজুরি খরচই উঠছে না। এতে করে ঋণদেনায় পড়তে হবে।’

পাঠকপাড়া গ্রামের শসা চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটই শসার দাম কমে যাওয়ার মূল কারণ। তাদের কারণেই বাইরের ব্যবসায়ীরা এখানে আসতে পারছেন না।’

পলীপাড়া গ্রামের শসা চাষি আব্দুল কাদের বলেন, ‘৫০ কেজি ওজনের একেকটি শসার বস্তায় ১০০ টাকাও মিলছে না। শসার ফলন ভালো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ছয় বস্তা বিক্রি করেও এক কেজি মাংস কেনার জোগান হচ্ছে না। শসা আবাদ করে এবার লোকাসানে পড়তে হয়েছে।’

পাইকারি সবজি বিক্রেতা দীপক কুমার বলেন, ‘বাহির থেকে পাইকাররা না আসায় শসার দাম পড়ে গেছে। পাইকাররা আসলেই দাম একটু বাড়তির দিকে থাকত।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ‘উপজেলায় শসার আবাদ ও উৎপাদন দুটোই আশানুরূপ হওয়া এবং বাজারে এক সঙ্গে শসা ওঠার কারণে দাম কমে গেছে। বাইরের পাইকাররা আসলেই দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

মন্তব্য

Beta version