-->
শিরোনাম

বৃষ্টিতে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
বৃষ্টিতে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন
জেলা সদরের যাত্রাপুর এলাকায় কোমর সমান পানি থেকে ধান কাটছেন কৃষকরা

গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। আর সবশেষ দুদিনে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে জেলার নিচু ধান ক্ষেতগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। তলিয়ে যাওয়া ক্ষেতগুলো থেকে পাকা ও আধা পাকা ধান তাড়াহুড়ো করে কেটে নিরাপদ স্থানে তুলছেন তারা।

কৃষকরা বলছেন, অধিকাংশ বোরো ধান পেকেছে। তবে এখনো কিছু কিছু ক্ষেতের ধান আধা পাকা রয়েছে। পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে টানা দুদিনের বৃষ্টিতে নিচু বোরো ধান ক্ষেতগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। কোনো জমিতে কোমর সমান পানিও হয়েছে। সোনালি ফসল রক্ষার্থে নারী, শিশুসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ধান কাটছেন তারা।

গতকাল বুধবার সকালে জেলা সদরের যাত্রাপুর, শুলকুর বাজার, ঘোগাদহ, পাঁচগাছি ও বিভিন্ন চর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাকা ও আধা পাকা বোরো ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। শ্রমিক সংকটের কারণে নিরুপায় হয়ে নিজেরাই পরিবারের ছোট বড় সব সদস্যরা মিলে ক্ষতির হাত থেকে ফসল রক্ষায় কোমর পানিতে নেমে বোরো ধান কাটছেন। পরে তা নৌকাযোগে উঁচু স্থানে তুলছেন। কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের নারী সদস্যরাও।

শুলকুর বাজারের কৃষক মনসুর আলী বলেন, ‘অধিকাংশ ধান পেকেছে। তবে এখনো কিছু কিছু ধান আধা পাকা রয়েছে। টানা দুদিনের বৃষ্টিতে আমাদের পাকা ও আধা পাকা বোরো ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।’

সদর উপজেলার ছত্রপুর জেলেপাড়া এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম। এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ২৯ জাতের বোরো ধান আবাদ করেছেন। ধান পাকার আগেই পুরো ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। বাধ্য হয়েই সেই ক্ষেত থেকে ধান কাটছেন তিনি।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পানি থেকে ধান তুলতেছি। তবে ক্ষেতের অর্ধেক ধানই পাতান পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরিবারকে খাওয়াব কী? ঋণের টাকা পরিশোধ করব কিভাবে?’

কুড়িগ্রামের পাঁচগাছি ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে আমাদের দশ শতক আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় আমরা পরিবারের সবাই মিলে কষ্ট করে ধান কাটছি।’

কুড়িগ্রামের আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর হোসেন জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলাটিতে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন ভারী বর্ষণ হতে পারেও বলে জানান তিনি।কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুর রশীদ বলেন, ‘দুই দিনের বৃষ্টিপাতে বোরো চাষিরা ধান কাটাতে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছেন। তবে ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে।’

মন্তব্য

Beta version