-->

জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত, ঋণ পরিশোধ না করতেই ট্রিপল মার্ডার

নরসিংদী প্রতিনিধি
জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত, ঋণ পরিশোধ না করতেই ট্রিপল মার্ডার

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন একজন জুয়ারি ছিলেন। জুয়ার টাকা জোগাড়ে মানুষের কাছে ঋণ ও বিভিন্ন সময় নানা জিনিসপত্র বিক্রি করতেন তিনি। সর্বশেষ জুয়ার টাকার জন্য বাড়ির আঙিনার গাছগুলোও বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে প্রায়ই স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝগড়া লেগেই থাকতো।

জুয়ায় হারতে হারতে একসময় গিয়াস ৯ লাখ টাকা ঋণ করে ফেলেন যা সুদে-আসলে ১২ লাখে দাঁড়ায়। আর এই ঋণের টাকা গিয়াস নিয়েছিলেন তার স্ত্রীর নামে।

‘ঋণ গ্রহিতা মারা গেলে ঋণের টাকা মওকুফ হয়ে যায়’, এমন তথ্য জানতে পেরে গিয়াস রাতের আঁধারে তার স্ত্রীকে হত্যা করে। স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি সন্তানরা জেনে যাওয়ার ভয়ে তাদেরকেও হত্যা করে পাষণ্ড গিয়াস।

নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান।

পিবিআই’র কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এনায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাহিমার স্বামী গিয়াস উদ্দিন মাদকাসক্ত ও জুয়ারি। জুয়ার টাকা যোগাড় করতে রাহিমার নামে বিভিন্ন এনজিও, শ্বশুর, শ্যালক ও সুদে মোট সাড়ে ৯ লাখ টাকা ঋণ নেয় গিয়াস।

এই সব টাকার ঋণ আনা হয় রাহিমার নামে, যা সুদে-আসলে ১২ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এই টাকা পরিশোধের জন্য গিয়াসের ওপর চাপ ছিল। সর্বশেষ জুয়া খেলার মতো কোনো টাকা তার হাতে ছিল না। তাই বাড়ির আঙিনা থেকে কয়েকটি গাছ বিক্রি করেন। তা নেওয়ার সময় প্রতিবেশী চাচাতো ভাই রেনু মিয়ার সঙ্গে গিয়াসের ঝগড়া হয়। এরই মধ্যে গিয়াস জানতে পারেন ঋণ গ্রহিতা ব্যক্তি মারা গেলে ঋণের টাকা মওকুফ হয়ে যায়। এই চিন্তা চেতনা থেকে গিয়াস স্ত্রী রাহিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গিয়াস রাতে বাড়ি ফিরে সন্তানদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত আড়াইটার দিয়ে স্ত্রীকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। স্ত্রীকে হত্যার পর সন্তানরা সবাইকে বলে দিবে, এই ভয়ে গিয়াস সন্তানদেরকেও হত্যা করে।

রোববার দিবাগত রাতে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের শেখবাড়িতে স্ত্রী রহিমা বেগম (৩৫), তার ছেলে সন্তান রাব্বি (১৩) ও মেয়ে রাকিবা আক্তার (৬) হত্যা করে গিয়াস উদ্দিন।

মন্তব্য

Beta version