তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা করলে জনগণকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ তা প্রতিরোধ করবে এবং এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি গতকাল শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতার আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে বিএনপি আবার নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনকি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সামনে বহিরাগতদের নিয়ে সন্ত্রাস, দেশের অন্যান্য জায়গায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-এগুলো সবই দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
আমরা আওয়ামী লীগ যেহেতু রাষ্ট্রক্ষমতায়, জনগণ আমাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে, সেহেতু আমাদের দলের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব হচ্ছে, দেশে যাতে কেউ শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে না পারে, ২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, সেটি যাতে না করতে পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং আমরা তাদেরকে সতর্ক করেছি।’ হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যদি এ ধরনের অপচেষ্টা আবারো চালানো হয়, জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তা প্রতিরোধ করবো।’
মন্ত্রী আরো বলেন, আসলে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কারণ তারা বলেছিলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করতে পারবেন না।
বিশ্বব্যাংকসহ পৃথিবীর অন্যান্য অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করে, সেজন্য নানা ষড়যন্ত্র, অপচেষ্টা, বহুকিছু করা হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের মতো একটি দেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে ফেলেছে।’
‘এ নিয়ে জনগণ যখন তাদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে, তখন তাদের মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে এবং সে কারণেই তারা নানা ধরনের আবোল-তাবোল কথা বলছেন।
মির্জা ফখরুল সাহেব সকালে একবার বলেন, বিকেলে আরেকবার বলেন। গয়েশ্বর বাবু রাতের কথা দিনে বলেন।
‘বিএনপি এই সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজাচ্ছে, ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে’ -এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিদায় ঘণ্টা তো তারা ২০০৯ সাল থেকেই বাজাচ্ছে।
যতই ঘণ্টা বাজাচ্ছে, ততই তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এবং নিজেদের বিদায় ঘণ্টাই বাজিয়ে দিয়েছে। আর ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন সবাই দেখতে পারে, স্বপ্ন দেখতে কোনো দোষ আমি দেখি না।
কিন্তু দেশে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা হয়, তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’
তিস্তা নদীর পানি নিয়ে ভারতের সাথে চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২১০০ সালকে সামনে রেখে ডেলটা প্ল্যান করা হয়েছে।
সারাদেশের জন্য একটা ফিজিক্যাল প্ল্যান করা হয়েছে। এর আওতায় সেটি বাস্তবায়নের কিছু কাজও শুরু হয়েছে।
সেই মহাপরিকল্পনায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টনসহ অন্যান্য অনেক বিষয় রয়েছে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রী যিনি ভবিষ্যৎ দেখেন, তিনি যেভাবে সারাদেশের ফিজিক্যাল প্ল্যানিং করে এই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে আমাদের মিলিত প্রচেষ্টা আর স্রষ্টার আশীর্বাদে ২০৪১ সাল নয়, তার আগেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হবে।’
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, কার্যনির্বাহী সদস্য এড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, এড. সফুরা বেগম রুনি প্রমুখ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বক্তব্য দেন।
মন্তব্য