-->
শিরোনাম

সাতক্ষীরা থেকে প্রতিদিন ২১ টন আম যাচ্ছে সারা দেশে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা থেকে প্রতিদিন ২১ টন আম যাচ্ছে সারা দেশে

সাতক্ষীরার বাজারে উঠছে পরিপক্ব আম। বাজার থেকে এসব আম চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। প্রতিদিন জেলার সুলতানপুর বড় বাজার থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে ২১ টন হিমসাগরসহ বিভিন্ন প্রজাতির আম। ফল ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তবে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, ফলন কম হওয়ায় এ বছর আমের দাম বেশি। চাষিরা জানিয়েছেন, দাম বেশি হলেও ফলন কম হওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। তারা আমের দাম ১৮০০-২২০০ টাকা পেলেও আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা শ্রেণিভেদে আম বিক্রি করছেন ২৪০০-৩০০০ টাকায়।

সাতক্ষীরা সদরের এল্লারচর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম দেড় বিঘা জমিতে আম বাগান করেছেন। এখন পরিপক্ব হিমসাগর আম ভেঙে বাজারে বিক্রি করছেন প্রতিদিন।

তিনি জানান, বাগানে হিমসাগর, ল্যাংড়া, কাঁচামিঠা ও গোবিন্দাভোগ জাতের আম রয়েছে। এখন হিমসাগর আম ভেঙে বিক্রি করছি। দাম পাচ্ছি ১৭০০-১৮০০ টাকা মণ। ফলন কম হওয়ায় এবার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আড়তদার ব্যবসায়ী মেসার্স ফাহিম সবজি ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী ওমর ফারুক জানান, সাতক্ষীরার আমের আলাদা সুনাম রয়েছে। বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমেও আমি আম পাঠাচ্ছি। হিমসাগর আমি বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৪০০ টাকা মণ। আর ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে ২০০০-২২০০ টাকা মণ। ভালো ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে। তবে হিমসগার আমের চাহিদা বেশি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমের আকার ও শ্রেণিভেদে হিমসগার বড় সাইজের পাকা আম ২৪০০-৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাতক্ষীরার হিমসাগার আম এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে দেশ বিদেশে। সাতক্ষীরা জেলা সদরে ছয়টি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে।

ইউএস বাংলা কুরিয়ার সার্ভিসে প্রতি কেজি আম ঢাকায় পাঠাতে নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা, ঢাকার বাইরে ১৫, এসএ পরিবহণে ঢাকায় পাঠাতে প্রতি কেজি ১৭, ঢাকার বাইরে ২২, এজেআর পার্সেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকায় পাঠাতে প্রতি কেজি ১২, ঢাকার বাইরে ১৫, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকায় পাঠাতে প্রতি কেজি ১২, ঢাকার বাইরে ১৬, জননী কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকায় পাঠাতে ১০, ঢাকার বাইরে নেওয়া হচ্ছে ১৫ এবং কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকাসহ সারা দেশে ১৫ টাকা প্রতি কেজি।

এসব কুরিয়ার সার্ভিসের সাতক্ষীরা কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ইউএস-বাংলা কুরিয়ার সার্ভিসে আম বুকিং হচ্ছে দৈনিক চার হাজার কেজি, এসএ পরিবহণে ১ হাজার ৫০০ কেজি, এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসে ৭০০-৮০০ কেজি, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ১১ হাজার কেজি, জননী কুরিয়ার সার্ভিসে ৪ হাজার ৪০০ কেজি, কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসে ৪০০ কেজি। সব মিলিয়ে দৈনিক সাতক্ষীরা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আম যাচ্ছে ১৮ হাজার ১০০ কেজি অর্থাৎ ১৮.১ টন।

অন্যদিকে সাতক্ষীরা বড় বাজার কাঁচামাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম জানান, বড় বাজার থেকে ট্রাকে করে দৈনিক ৩ টন আম যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। দেশের বিভিন্ন জেলার আম বাজারে আসায় বর্তমানে সাতক্ষীরার আমের চাহিদা একটু কমে গেছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির উপপরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়াসহ দেশীয় প্রজাতির আমগুলো এখন পরিপক্ব হয়ে বাজারে উঠছে। ব্যবসায়ীরা যেন আমে কোনো ধরনের ফরমালিন ব্যবহার না করে, সেজন্য তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে আবহাওয়ার কারণে এ বছর গাছে আমের ফলন অর্ধেকেরও কম। তাই দামটাও গত বছরের তুলনায় একটু বেশি।

মন্তব্য

Beta version